Now the new syllabus is being brought to cool down the students: আবেগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ছোটদের মধ্যে একটু কমই থাকে। তারা তাদের আনন্দ, দুঃখ, রাগ সবকিছুই প্রকাশ করে ফেলে। তারপর ধীরে ধীরে যত বয়স বাড়ে নিজে থেকেই আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে যায় শিশুরা। কিন্তু বর্তমানে একটি সমস্যা ভীষণভাবে চোখে পড়ছে শিশুদের মধ্যে। আবেগ নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা অনেকটা কমে গেছে। বিশেষ করে রাগের উপর কোন রকম নিয়ন্ত্রণ নেই তাদের। সামান্য কারণেই রেগে যাওয়া এবং সেই রাগের অতিরঞ্জিত বহিঃপ্রকাশ ঘটতে দেখা যাচ্ছে মাঝে মাঝে। এমন চরম পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে যে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী পদক্ষেপ নিয়ে ফেলছে তারা। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পাঠ্য সিলেবাসে (New syllabus) কিছু পরিবর্তন করেছে।
মূলত টিনেজারদের মধ্যে অর্থাৎ ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ বয়সন্ধির এই সময় মানুষের মধ্যে আবেগই কাজ করে সব থেকে বেশী। আবেগ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া এবং মার্জিত প্রকাশের পদ্ধতি শেখানোর জন্য এই বয়সটাই সব থেকে উপযুক্ত। পরিবার এবং স্কুলের পক্ষ থেকে শিশুদেরকে আবেগ নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দেওয়া হয় প্রতিনিয়ত, কিন্তু তারপরও নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে শিশুরা। অন্যান্য আবেগগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হলেও, রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ করা শেখানোর জন্য একাদশ শ্রেণির সিলেবাসে (New syllabus) যুক্ত হল নতুন একটি বিষয়।
একাদশ শ্রেণির সিলেবাসে (New syllabus) করা হয়েছে পরিবর্তন। একাদশ শ্রেণির শারীর শিক্ষা সংক্রান্ত বইটিতে নতুন একটি অধ্যায়ে যুক্ত করা হয়েছে শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে। অধ্যায়টির নাম ‘আবেগ সামলানোর দক্ষতা’। বয়সন্ধিকালে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের একাধিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় শিক্ষার্থীরা। কোনোটা ভালো তো, কোনোটা খারাপ। ভালো পরিস্থিতিকে গ্রহণ করার পাশাপাশি খারাপ পরিস্থিতিকেও গ্রহণ করে কিভাবে তা থেকে এগিয়ে যাওয়া যায় তা শিখতে হয় এই সময়েই একাদশ শ্রেণির শারীর শিক্ষা বইটিকে উপযুক্ত করেই তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বাস্তব জীবনে যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, সেগুলি কাহিনী আকারে তুলে ধরা হয়েছে পাঠ্যবইতে। শারীর শিক্ষার বইতে যুক্ত হওয়া নতুন অধ্যায়টিতে রাগ, দুঃখ, অভিমান, হিংসা প্রতিটি আবেগকে চিহ্নিত করা এবং সেগুলির প্রতিকার নির্ণয় করার বিষয়ে কিছু আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া যারা অল্পতেই রেগে যায় তাদের জন্য এই অধ্যায়টি খুবই উপকারী। এই অধ্যায়ে রয়েছে মাথা ঠান্ডা রাখার বেশ কিছু টোটকা।
সমাজে কিভাবে সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায়? আবেগের নিয়ন্ত্রণ কিভাবে করতে হয়? এ ছাড়া কখন? কোথায়? কতটুকু? আবেগের বহিঃপ্রকাশ করা সম্ভব। সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হয়েছে নতুন সিলেবাসে (New syllabus)। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি প্রবণতা দেখা দিয়েছে। সামনের জনের চোখে নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতেই হবে। আর সেটা না হলেই সামান্য কারণে রেগে যাচ্ছে তারা। শরীর ও মন সুস্থ রাখার জন্য যোগাসন, শরীরচর্চা, বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কাজে যুক্ত থাকার পাশাপাশি প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম। এই সব কিছুই রয়েছে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীর শারীর শিক্ষার সিলেবাসে। তার সাথে আলাদাভাবে আবেগ সামলানোর এই দক্ষতাগুলি যুক্ত হওয়ায়, তা শিশুদের জন্য অনেক বেশি উপকারী হবে বলে মনে করছে শিক্ষা দপ্তর।
তবে শুধুমাত্র আবেগ নিয়ন্ত্রণ নয়, শিশুদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতেও সাহায্য করবে নতুন সিলেবাসটি (New syllabus)। কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে দোটানোর মধ্যে থাকতে দেখা যায়। অনেক ভেবেও কোন সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে না তারা। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পাশাপাশি, যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলানোর এবং কল্পনা ও বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখাবে এই নতুন সিলেবাসটি। মনোবিদদের মতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তা কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে তার প্রমাণ পাওয়া যায় বহু সময়। তাই টিনেজারদেরকে এই বিষয়ে অবগত করার জন্য সিলেবাসে বিষয়টির সংযুক্তিকরণ সত্যিই প্রয়োজন ছিল।