The Holistic Progress Report Card is introducing to West Bengal very soon: ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি শ্রেণীর জন্য একটি করে রিপোর্ট কার্ড দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। সেখানেই সারা বছরের মাসিক এবং অন্তিম পরীক্ষার ফলাফল লেখা থাকে। পাশাপাশি উল্ল্যেখ করা থাকে সারা বছর সেই নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীটির অগ্রগতি সম্পর্কেও। বছরের শেষে সামগ্রিক মূল্যায়নের পর শিক্ষার্থীকে তার রিপোর্ট কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। পরের শ্রেণীর জন্য আবার নতুন রিপোর্ট কার্ড তৈরী হয়। এই পদ্ধতি পরিবর্তন হতে চলেছে। এখন থেকে ১ টাই রিপোর্ট কার্ড ব্যবহার করা হবে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর জন্য।
এখন থেকে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে ১ টি রিপোর্ট কার্ড। প্রথম শ্রেণীতে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত যাবতীয় পরীক্ষার ফলাফল থাকবে একটি রিপোর্ট কার্ডের মধ্যে। মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের পাশাপাশি থাকবে নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বা অবনতির তথ্যও থাকবে এই রিপোর্ট কার্ডে। অর্থাৎ প্রথম শ্রেণীতে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত একটি শিশুর সার্বিক মূল্যায়নের তথ্য লিপিবদ্ধ থাকবে ১ টি মাত্র রিপোর্ট কার্ডের মধ্যে। এই রিপোর্ট কার্ড নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছে অভিভাবক মহলও।
এই ধরনের রিপোর্ট কার্ডগুলোকে বলে হলিস্টিক প্রোগ্রেস রিপোর্ট কার্ড (Holistic Progress Report Card)। প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে এই রিপোর্ট কার্ডগুলিতে। সেই শিক্ষার্থী কোন শ্রেণীতে, কোন পরীক্ষায়, কত নম্বর পেয়েছিল? কোন শ্রেণীতে তার অগ্রগতি কেমন ছিল? তার ব্যবহার, সামাজিকীকরণে তার ভূমিকা সমস্ত কিছু উল্লেখিত থাকবে ১ টি মাত্র রিপোর্ট কার্ডে। ২০২৪ ২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই ধরনের রিপোর্ট কার্ডের ব্যবহার চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে । এই ধরনের রিপোর্ট কার্ড এর কিন্তু সুবিধা অসুবিধা দুটোই রয়েছে।
আরও পড়ুন ? School Birbhum: গরমের ছুটি শেষ, মর্নিং স্কুল, গিয়েই দেখলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা দেখলেন যা-তা অবস্থা
সুবিধা
হলিস্টিক প্রোগ্রেস রিপোর্ট কার্ড (Holistic Progress Report Card) ব্যবহার করলে সবথেকে বেশি উপকৃত হবে ছাত্রছাত্রীরা। এমনটাই মনে করছ শিক্ষা দপ্তর। এই ধরনের রিপোর্ট কার্ড ব্যবহার করলে যে যে সুবিধা পেতে পারে শিক্ষার্থীরা তা হল—
- প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ থাকবে ১ টি মাত্র রিপোর্ট কার্ডে।
- প্রাথমিক ও উচ্চ-প্রাথমিকে শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বা অবনতি যাচাই করা যাবে ১ টি মাত্র রিপোর্ট কার্ড দেখে।
- কোনো শিক্ষার্থীর আগের শ্রেণীর অবস্থানের সাথে বর্তমান শ্রেণীতে তার অবস্থানের মধ্যে তুলনা করা যাবে খুব সহজেই। রিপোর্ট কার্ড খুললেই যাবতীয় তথ্য চলে আসবে সামনে।
- আলাদা আলাদা ক্লাসের জন্য আলাদা রিপোর্ট কার্ড থাকলে অনেকে সেগুলোকে যত্ন করে তুলে রাখেন। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই শোনা যায়, তারা সেই রিপোর্ট কার্ডগুলি হারিয়ে ফেলেছে। ফলে আগের ক্লাসে তার অ্যাক্টিভিটি কেমন ছিল তা জানা যায় না। ১ টি রিপোর্ট কার্ডের মধ্যে সব কিছু নথিভুক্ত থাকলে সেই সমস্যায় পড়তে হবে না কাউকেই।
- শিক্ষার্থীদের সার্বিক মূল্যায়নে এই রিপোর্ট কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
অসুবিধা
একটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ১ টি রিপোর্ট কার্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সুবিধা যেমন আছে, তেমন অসুবিধাও কিন্তু আছে বেশ কিছু—
- সরকারি বিদ্যালয়গুলির বর্তমান পরিকাঠামোতে এই হলিস্টিক প্রোগ্রেস রিপোর্ট কার্ড (Holistic Progress Report Card) পদ্ধতি ব্যবহার করা আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
- উচ্চ প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং পরিকাঠামোগত বেশ কিছু খামতি রয়ে গেছে এখনো। এই সমস্ত বিষয়গুলির নিষ্পত্তি না হলে ১ টি রিপোর্ট কার্ড ব্যবহার করার এই পদ্ধতিটি বাস্তবায়িত করতে সমস্যায় পড়তে হবে ।
- হলিস্টিক প্রোগ্রেস রিপোর্ট কার্ড ব্যবহার করার জন্য সত্ত্বর উন্নত পরিকাঠামোযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করতে হবে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে।
- আমাদের রাজ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের জন্য আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত রিপোর্ট কার্ড উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অব্দি বয়ে নিয়ে আসার জন্য দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযুক্তিকরণের প্রয়োজন।