Mohamed Muizzu: ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের রাজনৈতিক সম্পর্ক অবনতির মূল কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য। তবে মালদ্বীপের সেই দুই মন্ত্রীকে অবশেষে ইস্তফা দিতে হয়েছে পদ থেকে। এই দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর দিল্লি সফর শুরু হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। তার আগেই পদত্যাগ করতে হল ওই দুই মন্ত্রীকে। ‘চিনপন্থী’ মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার দিল্লি এবং মালদ্বীপের সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ততায় পরিণত হচ্ছিল। এর মাঝে বিতর্কিত মন্তব্য করে আগুনে ঘি ঢেলে দেয় মালদ্বীপের দুই মন্ত্রী। ভারতের বিরোধিতা করার ফলে নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল মালদ্বীপকে। কিন্তু বর্তমানে দিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্ব পুনরায় মজবুত করতে উদ্যোগী তিনি।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গিয়েছিলেন লাক্ষাদ্বীপ সফরে, তারপর থেকেই দিল্লি-মালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। দুই দেশের পারস্পরিক সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। মোদিকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন যুব, তথ্য ও শিল্প মন্ত্রকের দুই মন্ত্রী মালশা শরীফ এবং মরিয়ম শিউনা-সহ আর এক মন্ত্রী আবদুল্লাহ মাহজুম মজিদ। কিন্তু সম্প্রতি ইস্তফা দিয়েছেন মালদ্বীপের দুই মন্ত্রী।
তারা ভারতের সমুদ্র সৈকতগুলো নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত বলে কটাক্ষ করেন এমনকি ভারতের বিভিন্ন নেতাদের নিয়েও কুরুচিকর মন্তব্য করেন। সেই ঘটনার পর থেকে শুরু হয়েছিল নিন্দার ঝড়। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় নিন্দা শুরু হয় এবং স্লোগান ওঠে ‘বয়কট মালদ্বীপ’। বিভিন্ন দিক থেকে কোণঠাসা হওয়ার পর বাধ্য হয়ে মুইজ্জু সরকার (Mohamed Muizzu) সাসপেন্ড করেন ওই তিনজন মন্ত্রীকে। মঙ্গলবার মালশা ও মরিয়ম মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন।
আরো পড়ুন: গোটা দেশ দেউলিয়া, মুখ বাঁচাতে ষড়যন্ত্র ত্বত্ত আউড়াচ্ছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট
সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর (Mohamed Muizzu) কার্যালয়ের প্রধান মুখপাত্র হেনা ওয়ালিদ জানিয়েছেন যে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু খুব তাড়াতাড়ি ভারত সফরে রওনা দেবেন। ভারতে এসে তিনি দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত ছিলেন মুইজ্জু। বেশ ভালো মেজাজে কথা বলতে দেখা যায় এই দুই রাষ্ট্রনেতাকে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে তারা আলাপ আলোচনা করেন।
প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় সেনা সরানোর ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন মুইজ্জু। মালদ্বীপ তার নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে সরে এসে ভারত বিরোধীতা শুরু করে। এই অপমানের প্রতিবাদ হিসেবে মালদ্বীপের অনুদানে বড়সড় কাটছাঁট করে দেয় দিল্লি। পর্যটকরা মালদ্বীপ বয়কট করার ফলে অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে মালদ্বীপের। ভারতের সঙ্গে সংঘাত তার ক্ষতি দেখে আনবে, এটাই বুঝতে পারে মালদ্বীপ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এক অনুষ্ঠানে ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেন মুইজ্জু। মুইজ্জু সরকার আবারও সমস্ত সম্পর্ক ঠিক করে নিতে চায় ভারতের সঙ্গে। জনগণের ক্ষোভের কারণে যদি গদি ছাড়তে হয় সেই ভয় কাজ করেছিল দ্বীপরাষ্ট্র এর প্রেসিডেন্টের।