কথায় বলে, নিজের কাজ ছাড়া অন্য সকলের কাজ বেশ সহজ এবং ভালো মনে হয়। তবে বাস্তবে যে যে ধরনের পেশায় রয়েছেন, সেই পেশায় ওয়ার্ক লোড, সমস্যা, সুবিধা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত। অনেক সময় আবার নিজের কাজ পছন্দ না করে, ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন অনেকে। অনেকে আবার একটা কাজ ছেড়ে আরও ভালো চাকরির আশায় থাকেন। এই সমাজে এমন অনেক জনকে পাওয়া যাবে, যারা সরকারি চাকরি করার জন্য মোটা মাইনের চাকরি ছেড়েছেন। অন্যদিকে অধ্যাপক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীরা সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন। কিন্তু এই প্রতিবেদনে এমন একজনের কথা বলা হচ্ছে, যার কাছে এসবের কোনও মূল্যই নেই। ওই ব্যক্তির খামখেয়ালী জানা মাত্র অবাক হতে সময় লাগবে না আপনার।
যদি আপনাদের বলি অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে কুলির কাজ করতে, আপনি কি রাজি হবেন? উত্তর সম্ভবত না। কুলিদের রোদে গরমে যেমন পরিশ্রম করতে হয়, তেমন আবার উপার্জন কম। লোকের বোঝা বইতে হয় কুলিদের। সমাজের উচ্চ শ্রেণীর মানুষজনের কাছে তারা খুব একটা বিশেষ সম্মান পান না। অন্যদিকে একজন অধ্যাপক সমাজের সম্মানীয় ব্যক্তি হিসেবে গণ্য হন। সঙ্গে রয়েছে মোটা মাইনে। রয়েছে একাধিক সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু এই প্রতিবেদনে এমন একজনের কথা বলা হচ্ছে, যিনি সমস্ত সুযোগ সুবিধা, মোটা মাইনের অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে নাকি কুলিগিরি শুরু করেছেন। অধ্যাপকের চাকরি নাকি তার ভালো লাগে না। তাই এই পেশা বেছে নিয়েছেন তিনি।এই ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপকভাবে শোরগোল শুরু হয়েছে সব মহলে।
অধ্যাপনার পেশা ছেড়ে কুলির কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নেন এক তরুণ। অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরবাদের আবদুল্লাহপুরমেটে। জানা গেছে হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি কেলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতেন ওই যুবক। কয়েকদিন ধরে প্রায় অন্যমনস্ক থাকতে দেখা যেত তাঁকে। কিছুতেই পড়াশোনার কাজে মন বসাতে পারছিল না সে। কলেজের একটি হোস্টেলে থেকে অধ্যাপনা করতেন তেলাঙ্গানার খাম্মাম জেলার বাসিন্দা। গত ৭ এপ্রিল কলেজে আসার পর আর হোস্টেলে ফিরে যাননি তিনি। এদিকে, হোস্টেলে না ফেরায় চিন্তায় পড়েন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই অধ্যাপক বাড়ি গিয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ হয় তাঁদের। কিন্তু এরপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, সেখানেও ওই অধ্যাপক যাননি বলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল।
এরপরেই পরিবারের তরফে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। থানাকে পরিবার জানায়, আগে তাঁকে একটি বাজারে কুলির কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। পরিবারের এই তথ্য, তরুণ অধ্যাপকের তল্লাশিতে সাহায্য করে পুলিশকে। এরপর হায়দরবাদের আবদুল্লাহপুরমেটের একটি স্থানীয় বাজারে পুলিশের একটি দল নজরদারি চালাতে শুরু করে। নজরদারি চালানোর পর তরুণ অধ্যাপকের খোঁজ মেলে বলে জানিয়েছেন আবদুল্লাহপুরমেট থানার পুলিশ কর্তা সুনীল কমার।
মঙ্গলবার সকালে নজরে পড়ে ওই তরুণ অধ্যাপক একটি ফলের দোকানে কুলির কাজ করছেন। এরপর তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে পরিবারের হাতে তরুণ অধ্যাপককে তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় অবাক হয়ে পড়েন ফলের দোকান সংলগ্ন এলাকার মানুষজন। উচ্চশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও এই ঘটনা, তরুণ অধ্যাপকের মানসিক বিকৃতি ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ। এজন্য ওই তুরুণের কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেছে তারা।