নিজস্ব প্রতিবেদন : কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) গত বুধবার জানিয়ে দিয়েছে, ২০১০ সালের পর থেকে যে সকল ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Certificate) ইস্যু করা হয়েছে সেগুলি অবৈধ। কলকাতা হাইকোর্টের এমন ঘোষণার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রায় ৫ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেটধারীদের মাথায় বাজ পড়েছে। কেননা এই সার্টিফিকেট বাতিল হলে তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে।
ওবিসি সার্টিফিকেট সরকারি চাকরি থেকে অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে সংরক্ষণ দেওয়ার কারণে অনেকেই আশঙ্কা করছেন তারা সুবিধা ও সরকারি চাকরির মত সংরক্ষণ থেকে বঞ্চিত হবেন। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের সেই রায় কোনভাবেই মেনে নিচ্ছেন না বলে বুধবারই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই হুঁশিয়ারির পর এবার চরম সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য।
মূলত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই রায়ের পাল্টা হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর বৃহস্পতিবার ছুটির দিন থাকলেও ওই দিনই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য সমস্ত রকম প্রস্তুতি শুরু করে দেয় নবান্ন। শুরু হয় আইনজীবীদের সঙ্গে কথাবার্তা, এমনটাই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ। এর পাশাপাশি প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে যাতে দ্রুত এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মূলত ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিলেও যতদিন না পর্যন্ত এই বিষয়টির মীমাংসা হচ্ছে ততদিন নানান সমস্যা থাকবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা। মামলার মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত চাকরিতে নিয়োগ থেকে শুরু করে বৃত্তি প্রদান সব ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হতে পারে। আবার তাড়াহুড়ো করে ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়ার কারণেই কোথাও কোনো সমস্যা তৈরি হল কিনা তা নিয়েও প্রশাসনের অন্দরমহলে প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে।
যারা ওবিসি সার্টিফিকেটের সুবিধা নিয়ে ইতিমধ্যেই চাকরিতে নিয়োগ হয়ে গিয়েছেন অথবা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রয়েছেন তাদের কোন সমস্যা না হলেও চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে পড়াশুনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালতের রায় সমস্যা তৈরি করবে। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও প্রশাসনিক কর্তাদের তরফ থেকে মনে করা হচ্ছে, কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়ের পাল্টা হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট ন্যূনতম স্থগিতাদেশ না দিলে চরম সমস্যায় পড়তে হবে সরকারকে।