Akash, the son of a migrant worker, who used to sell clothes, excelled in IIT JAM: কথায় আছে কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে, আজ তারই প্রমাণ দিলেন আকাশ আলম। মুড়ি বিক্রি করে নজির গড়লেন শীতলকুচির আকাশ। যার সাফল্যে মুগ্ধ সকলে। তার এই কৃতিত্ব সকলের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। কিন্তু সামান্য মুড়ি বিক্রি করে কি এমন করলেন তিনি? কিসের জন্য তার এই কৃতিত্ব?
খবর রয়েছে প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরে দিন-রাত এক করে খেটে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি জয়েন্ট এডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স (IIT JAM) নজির গড়েছে আকাশ আলম। সারা দেশ জুড়ে এই পরীক্ষায় ১১৭ র্যাঙ্ক করেছে লালবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের আমতলার আকাশ আলম। তবে এমনি এমনি এই সাফল্য অর্জন করেননি। এর পিছনে রয়েছে তার কঠোর পরিশ্রম। যা শুনলে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে।
জানা গিয়েছে বাবা-মা, বোন সহ আকাশ আলমের পরিবারে চারজন সদস্য। তার মধ্যে বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাবাও অন্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। ফলেই বর্তমানে মাকে নিয়ে থাকেন আকাশ। বোনের বিয়ে দেওয়ার পর সংসার চালানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তাই সংসারের হাল ধরতেই মুড়ি বিক্রি শুরু করেন আকাশ। আর সেই মুড়ি বিক্রি থেকে উপার্জন করে পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে IIT জ্যাম (IIT JAM) -এর পরীক্ষায় কৃতিত্ব লাভ করে আকাশ আলম।
আকাশের কথায়, সকাল-সন্ধ্যা দোকানে মুড়ি বিক্রি করে। রাত্রিবেলা পড়াশোনায় সময় দেয়। আর সেখান থেকেই তার এই নজর কারা সাফল্য। তবে তার ইচ্ছে রয়েছে পড়াশোনা শেষ করে আইআইটিতে শিক্ষকতা করার। অপরদিকে ছেলের এই সাফল্যে আনন্দের পাশাপাশি চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে বাবা-মার। ছেলের পরবর্তী পড়াশোনার খরচ কিভাবে চালাবেন? তবে এই বিষয়ে আকাশের মা রোশনারা বিবি জানান, মুড়ি বিক্রি করে আকাশ নিজের পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে চলেছে। তবে তারা কি করবে ভেবে উঠতে পারছে না। ফলে এই সময় কেউ যদি তাদের পাশে দাঁড়ান তাহলে আকাশের স্বপ্ন পূরণ হয়।
সূত্রের খবর, শুধু এই পরীক্ষায় নয়, আকাশের কেরিয়ার চার্ট যদি দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন সে কতটা ট্যালেন্টেড ছাত্র। ছোটবেলায় পড়াশোনা করেছেন বিদ্যাসাগর শিশুনিকেতন থেকে। তারপর মাধ্যমিক পাশ করে বড় মরিচা দেলোয়ার হোসেন উচ্চবিদ্যালয় থেকে। এরপর সাইন্স নিয়ে বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির থেকে দারুন ফল লাভ করেন উচ্চমাধ্যমিকে। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে ২০২২ সালে ৮৯.৬৭ শতাংশ পেয়ে গণিতে বিএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজ থেকে। তারপরেই তার কঠোর পরিশ্রম শুরু হয়। যার ফল প্রকাশ হয় গত ২২শে মার্চ। আর সেখানেই নজির গড়ে শীতলকুচির বাসিন্দা আকাশ আলম। তবে এই মেধাবী ছাত্রের স্বপ্ন পূরণে কেউ যদি এগিয়ে আসে আকাশসহ তার বাবা-মায়ের অনেকটাই উপকার হয়।