আগামীকাল মকর সংক্রান্তি, রইলো পুণ্যকাল ও পৌরাণিক গুরুত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদন : আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মকর সংক্রান্তি। বছরে ১২ টি সংক্রান্তি থাকলেও মেষ, কর্কট, তুলা ও মকর সংক্রান্তি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। যাদের মধ্যে আবার মকর সংক্রান্তিকে আরও বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। পৌষ মাসের শেষ দিনে সূর্যের ধনু মকর রাশিতে প্রবেশ করার মুহূর্তকেই মকর সংক্রান্তি হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশের সাথে সাথে সমস্ত শুভ কাজের শুভারাম্ভ হয়ে যায়। যেমন বিবাহ, অন্নপ্রাশন, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি। এই সময়েই সূর্যের দক্ষিণায়ণের সমাপ্তি ঘটে এবং উত্তরায়ণের শুরু হয়।

দৃক পঞ্জিকা অনুসারে আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করবে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করবে। পুণ্যকাল চলবে বিকাল ৫:৪৬ মিনিট পর্যন্ত। অন্যদিকে মহা পুণ্যকালের সময় রয়েছে সকাল সাড়ে আটটা থেকে সকাল ১০:১৫ পর্যন্ত।

শাস্ত্র মতে সূর্য দক্ষিণায়ণে থাকাকালীন দেবতাদের ছয় মাস রাত এবং উত্তরায়ণে থাকাকালীন দেবতাদের ছয় মাস দিন হিসাবে বিবেচিত হয়। যে কারণে দক্ষিণায়ণকে অশুভ এবং অন্ধকারের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে উত্তরায়ণকে শুভ এবং প্রকাশের প্রতীক হিসাবে ধরা হয়ে থাকে।

শাস্ত্র মতে, মকর সংক্রান্তির দিন সূর্য শনির সাথে দেখা করার জন্য শনির গৃহে প্রবেশ করেন। শনি মকর রাশির অধিপতি হওয়ায় সূর্যের প্রভাবে শনি দুর্বল হয়ে পড়ে। মকর সংক্রান্তির দিন সূর্য এবং শনির সাধনা প্রদানের ফলে শনির দোষ কেটে যায়।

অন্যদিকে আবার মকর সংক্রান্তির দিন গঙ্গাস্নানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শাস্ত্র অনুযায়ী মকর সংক্রান্তির দিনই বিষ্ণুর বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ থেকে গঙ্গা নির্গত হয়ে ভগিরথের পিছন পিছন কপিল মুনির আশ্রম পৌঁছান। আর কপিল মুনির আশ্রম থেকেই সাগরে মিশে যান গঙ্গা। আর সেই সময় গঙ্গা ভগিরথের পূর্বপুরুষ মহারাজ সগরের পুত্রদের মুক্তি প্রদান করেন।

আবার অন্য এক পৌরাণিক মতে, পিতামহ ভীষ্ম মহাভারত যুদ্ধ শেষে সূর্যের উত্তরায়ণের জন্য অপেক্ষা করেন এবং মকর সংক্রান্তিতে প্রাণ ত্যাগ করেন। আবার এটাও মনে করা হয় যে কৃষ্ণকে সন্তানরূপে পাওয়ার জন্য যশোদা এই দিন উপবাস করেছিলেন।

এছাড়াও মকর সংক্রান্তি সম্পর্কে আরও একাধিক পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। আর এই সকল কারণে দিনের পর দিন মকর সংক্রান্তি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই গুরুত্বের কারণে গঙ্গাসাগর, জয়দেব এসকল আজও অপরিসীম হয়ে রয়েছে মানুষের কাছে।