হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন আসলে কি, এই ওষুধে কি করোনা আটকানো সম্ভব

Madhab Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রামিতদের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বের গবেষকেরা করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সামান্য আশার আলো দেখতে পেলেই তা প্রয়োগ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জোর দেওয়া হচ্ছে। আর এমন পরিস্থিতিতে পথ দেখাচ্ছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। যে ওষুধের জন্য মরিয়া বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশ।

Advertisements

Advertisements

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের ন্যশনাল টাস্ক ফোর্স সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোভিড-১৯ (করোনা) প্রতিরোধে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ওষুধ খাওয়া যায়।করোনার সংক্রমণ রুখতে ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কার্যকর হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ওষুধ নিয়ে ঘোষণার পরেই আমেরিকায় এই দু’টি ওষুধের চাহিদা খুব বেড়ে গিয়েছে।

Advertisements

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন আসলে কি?

হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন দুটিই কুইনিন থেকে তৈরি হয়। এই ওষুধ প্রথম পেরু থেকে আমদানি করা হয়। পেশির আরামের জন্য ব্যবহার হত। এর সঙ্গেই সিঙ্কোনা গাছের ছালের গুঁড়ো, তার সঙ্গে মিষ্টি জল মিশিয়ে তৈরি হত এক জাতীয় টনিক। তাতে তিতকুটে স্বাদ কিছুটা কমত। ১৯৩৪ সালে জার্মান গবেষকরা সিন্থেটিক ক্লোরোকুইন তৈরি করেন। ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবেই এর ব্যবহার হত। এরই কম টক্সিক ভার্সন হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন।

কারা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খাবেন?

তবে এই ওষুধ সবার জন্য নয়, খাবেন শুধু সেই সব মানুষ যাঁরা সরাসরি করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, কিন্তু এখনও রোগের উপসর্গ দেখা দেয়নি। যেমন, করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন এমন ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য সেবাকর্মী ও কেয়ার গিভার অর্থাৎ হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীর সেবা করছেন যিনি। তবে তাঁদের বয়স হতে হবে ১৫ বছরের বেশি ও তাঁদের হার্টের কোনও সমস্যা থাকলে চলবে না। তবে তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কি কোনও পার্শ্বপতিক্রিয়া আছে?

তবে এই ওষুধের নিজস্ব সাইড এফেক্টও আছে। বহু ক্ষেত্রে ওষুধ খাওয়ার পরেও রোগ হয়। তার উপর হাজারে বা ১০ হাজারে এক জনের কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া নামে হৃদরোগের আশঙ্কা থাকে। বেশ কিছু সমস্যা যেমন সোরিয়াসিস, পরফাইরিয়া, লিভারের অসুখ, অ্যালকোহলিজম ইত্যাদি থাকলে ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় বড় ক্ষতি হতে পারে।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে এত সমস্যা কেন?

হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন করোনার প্রতিষেধক হতে পারে এই খবর প্রকাশ পেতেই বিশ্ব বাজারে এর চাহিদা বেড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের থেকে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন রপ্তানির আবেদন করেছেন। কিন্তু বিদেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানি করলে ভারতে এর অভাব হতে পারে এই কথা ভেবে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে কেন্দ্র। আর এই খবর আমেরিকায় পৌঁছাতেই মাথায় বাজ পড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন না পেলে আমেরিকা পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই বিধি শিথিল করে ভারত জানায়, করোনা সংক্রামিত দেশগুলিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন রপ্তানি করা হবে।

ভারতের কাছ থেকে আমেরিকা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন চাইছে কেন?

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন করোনা প্রতিরোধে একেবারেই কার্যকর নয়। সারা বিশ্বের সংক্রামিত দেশগুলি এই নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা চালাচ্ছে। কোথাও ভালো ফল দেখা দিচ্ছে আবার কোথাও অন্য রোগ ডেকে আনছে। যেহেতু আমেরিকার পরিস্থিতি সংকটময় তাই তারা খড়কুটো আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইছে। হয়তো তাদের দেশে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন কিছুটা ভালো কাজ করছে আর তাই এর উপরে নির্ভরশীলতা বেড়েছে।

Advertisements