ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই, সুরক্ষার অভাবে অ্যাম্বুলেন্স চালানো বন্ধ করলেন চালকরা

অমরনাথ দত্ত : ‘ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই’, এমনটাই দাবি করে অ্যাম্বুলেন্স চালানো বন্ধ করে দিলেন বীরভুমের বোলপুরের সিয়ান হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। তাদের অভিযোগ, “করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের বাড়বাড়ন্তের মুহূর্তে তাদের সুরক্ষার জন্য কোন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার।” শুধু এখানেই শেষ নয় সামাজিক দিক থেকেও তাদেরকে বারংবার হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। যে কারণে কোনো রকম উপায় খুঁজে না পেয়ে আপাতত অ্যাম্বুলেন্স চালানো বন্ধ রাখলেন তারা।

উপায়, সুরক্ষা! পরিষ্কার করে বলতে হলে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে চলেছে দেশজুড়ে। আর এহেন মুহূর্তেও অ্যাম্বুলেন্স চালকদের পরিষেবা দেওয়াটা আবশ্যিক, তা তারা দিয়েও আসছেন। কিন্তু তাদের অভিযোগ, অ্যাম্বুলেন্স চালানোর ক্ষেত্রে এই মুহুর্তে যে সকল পোশাক, স্যানিটাইজার, মাস্ক ইত্যাদি প্রয়োজন তা তাদের সরবরাহ করা হয়নি। আর বাজারেও অমিল। সুতরাং এমত অবস্থায় নিজেদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে, নিজেদের পরিবারের কথা মাথায় রেখে কিভাবে অ্যাম্বুলেন্স চালাবেন? তাদের দাবি, সরকার এগুলির ব্যবস্থা করুক অথবা তাদের অ্যাম্বুলেন্সগুলি নিয়ে সরকারিভাবে অন্য কোন চালকদের দিয়ে চালানোর ব্যবস্থা করা হোক। আর তার জন্য সরকারের তরফ থেকে গাড়ির মালিকদের কোন রকম খরচ দিতে হবে না।

তবে এই অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অভিযোগের সমাপ্তি এখানেই নয়। তাদের আরও বড় অভিযোগ হলো সামাজিকভাবে হেনস্থা নিয়ে। তাদের অভিযোগ, “তারা যখন অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে বাড়ি ফিরছেন তখন পাড়া-প্রতিবেশীরা তাদের পাড়ায় প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। পাড়া-প্রতিবেশীর দাবি, আমরা যে রোগী নিয়ে যাচ্ছি সেই রোগী করোনা সংক্রমিত ছিল কিনা কে জানে। তাছাড়াও পাড়া-প্রতিবেশীরা বারবার অভিযোগ করছেন গাড়িতে না আছে স্যানিটাইজার, না আছে অন্য কোন বন্দোবস্ত। তাহলে! আর পাড়া-প্রতিবেশীদের দাবিটাও তো ঠিক।”

এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স চালকরা এটাও জানান, “কোন গ্রামে রোগী আনতে গেলে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোন ডেড বডি আনতে যাওয়ার সময় বা নিয়ে আসার সময় মেনরোড দিয়ে আনতে দিচ্ছে না এলাকার বাসিন্দারা। ঘুর পথে আনতে হচ্ছে। আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানে কোনো না কোনোভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এইভাবে পরিষেবা দেওয়াটা কোন মতেই সম্ভব নয়। প্রশাসনিক সাহায্য ছাড়া আমরা পরিষেবা দিতে পারব না।”

প্রশান্ত মন্ডল নামে এক অ্যাম্বুলেন্সের মালিক জানান, “আমরা কখনোই চাইনা অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাক। তাতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হবে। কিন্তু আমাদের কথাটাও ভাবতে হবে সরকারকে। আমরা অ্যাম্বুলেন্স চালাতে রাজি আছি যদি প্রশাসন আমাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করে, প্রশাসন গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে আমাদের বাড়ি ঢোকার ব্যবস্থা করে।আর যদি এমনটা না করতে পারে তাহলে আমরা আমাদের অ্যাম্বুলেন্সগুলি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আপাতত দিয়ে রাখতে চাই কোনরকম মাসিক খরচ ছাড়াই। তারা হাসপাতালের চালক দিয়ে গাড়ি চালাক তাতে আমাদের কোন অসুবিধা নেই।”