নিজস্ব প্রতিবেদন : গরু পাচার কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) গ্রেপ্তার হওয়ার পরই যেন দলের সঙ্গে তার দূরত্ব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। হামেশাই দেখা গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠদের বিভিন্ন পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্ততপক্ষে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য এমনটাই। আর এবার তৃণমূল এমন পদক্ষেপ নিল যে অনুব্রত যুগই অতীত হয়ে গেল!
ভাবতে অবাক লাগলেও কিন্তু এমনটাই ঘটেছে। আর এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বীরভূমের রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে অনুব্রত মণ্ডলের নাম ধীরে ধীরে বিলীন হতে চলেছে? শুধু প্রশ্ন ওঠা নয়, গত সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেই তালিকা থেকে এমন নানান সংশয় তৈরি হচ্ছে। কেননা সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে প্রকাশ করা এই তালিকায় যা ঘটেছে তা গত ১৫-১৬ বছরেও কেউ দেখেন নি।
রাজ্যে ক্ষমতায় তৃণমূল আসার আগেও তৃণমূলের তরফ থেকে জেলাগুলির যে সভাপতিদের নাম প্রকাশ করা হতো তাতে বীরভূমের নামের পাশে সব সময় জ্বলজ্বল করতো অনুব্রত মণ্ডলের নাম। শাসক দল হিসেবে তৃণমূল সরকারে আসার পরও কখনো এই জায়গায় পরিবর্তন হতে দেখা যায়নি। কিন্তু এবার এই তালিকায় দেখাই গেল না অনুব্রত মণ্ডলকে। এমনকি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরও গত বছর পর্যন্ত এই জায়গায় কোন পরিবর্তন আসেনি।
কিন্তু এবার পরিবর্তন এনে দিল তৃণমূল। এবার যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেই তালিকায় বীরভূমের জেলা সভাপতির নামের পাশে আর দেখা গেল না অনুব্রত মণ্ডল। বরং সেখানে অনুব্রত মণ্ডলের পরিবর্তে লেখা রয়েছে ‘কোর কমিটি টু কমিটি’। এই ঘোষণার পরই স্পষ্ট হয়ে গেল যে আর অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি থাকলেন না।
অনুব্রত মণ্ডলের নাম এইভাবে তালিকা থেকে সরে যাওয়ার পর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের একাংশের মন এখন ভেঙ্গে পড়েছে। কেননা সংগঠক হিসাবে অনুব্রত মণ্ডলের বিকল্প আর কেউ হবে না বলেই তারা মনে করেন। অনুব্রত মণ্ডল এমন একজন রাজনৈতিক যিনি নির্বাচন থেকে সংগঠন যেভাবে এক হাতে সামলাতেন তা সত্যিই অবাক করা। রাজনৈতিক মহলে এখনো এই কারণেই একটি কথা প্রচলিত রয়েছে আর সেটি হল, অনুব্রত মণ্ডলের কথায় বাঘে গরুতে জল খেত একঘাটে।