The famous Ashtami Chatu of Bankura is eaten by people throwing away the meat: বাঙালি মানেই কিন্তু ভোজনরসিক এক জাতি। চিরকালই ভাল খাওয়াদাওয়ার প্রতি বাঙালির একটা বিশেষ আকর্ষণ রয়ে গেছে। রসিয়ে কষিয়ে কব্জি ডুবিয়ে একমাত্র বাঙালিরাই খেতে পারে। বাঙালি সর্বদাই নানাবিধ পদে, পঞ্চব্যঞ্জনে ভুঁড়িভোজ পছন্দ করে। বিশেষ করে এই মরশুমে বাঁকুড়াবাসীর পাতে দেখা যায় দারুণ এক আইটেম, নাম অষ্টমী ছাতু (Ashtami Chatu)। এই নাম আশা করি অনেকেই শোনেন নি।
সবাই আসলে একে চেনে অন্য এক নামে তা হলো মাশরুম। এখানে একেই বলা হয়েছে অষ্টমী ছাতু (Ashtami Chatu)। বাঁকুড়া তথা জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে এটাই হলো ছাতু এবং এটি স্বাদে কিন্তু খুবই সুস্বাদু। একবার খেলে আপনি এর স্বাদ ভুলতে পারবেন না। এই ছাতু অনায়াসে চিকেন বা মটনকে টেক্কা দিতে পারে। শহরাঞ্চলের বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাশরুমের দেখা মেলে, সেটা আবার মানুষের চাষ করা।
কিন্তু অষ্টমী ছাতু (Ashtami Chatu) প্রাকৃতিক ভাবেই পাওয়া যায়। অন্যান্য জেলার তুলনায় বাঁকুড়া জেলায় এই ছাতুর চাহিদা সব থেকে বেশি। অষ্টমী তিথিতে জঙ্গলের এই ছাতুর স্বাদ নিতে মুখিয়ে জেলাবাসী কিন্তু এর দাম সম্পর্কে জানেন কি? অষ্টমী তিথিতেই এই ছাতুর দেখা মিলে। জন্মাষ্টমী থেকে দুর্গা অষ্টমী পর্যন্ত এই ছাতু বাজারে পাওয়া যায়। দাম শুনলে মাথায় হাত পড়বে আপনার। কোথায় হাজার টাকা কিলো, আবার কোথাও চারশো টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ আবার গণ্ডা হিসেবেও বিক্রি করছেন এই ছাতু।
জন্মাষ্টমী তিথিতে প্রথম দেখা পাওয়া যায় এই ছাতুর (Ashtami Chatu)। সেই সঙ্গে এও বার্তা নিয়ে আসে যে দুর্গাপূজার আর দেরি নেই। বছরে একবার এর স্বাদ নিতেই হবে বাঁকুড়াবাসীকে দাম যত বেশি হোক তারা অবশ্যই কিনবে। সেই জন্য দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছাতু কিনতে বিভিন্ন বাজারে ভিড় জমান। বাঁকুড়াবাসীরা নিজের বাড়ির জন্য নিয়ে যান এমনকি কেউ আবার আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে পাঠানোর জন্য এই ছাতু কেনেন।
ব্যবসায়ীরা কি বলছেন এর ব্যাপারে? আসলে অন্যান্য বছরে তুলনায় বৃষ্টিপাত কম হবার জন্য ছাতু সেভাবে উৎপাদন হয়নি। এছাড়াও জঙ্গলে হাতির ভয়, রাত জেগে বনে গেলে থাকে হিংস্র বন্যপ্রাণীর আক্রমণ, সাপের কামড়ের ভয়কে উপেক্ষা করে গভীর জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করতে হয় ছাতু। সকালবেলা সেই ছাতু বাজারে নিয়ে আসা হয়। অন্যান্য বছর তুলনায় উৎপাদন কম বলে দাম অনেকটাই বেশি। মাংস ফেলে এই ছাতু এই সবার প্রিয় শুধুমাত্র এর স্বাদের জন্য। তাই হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন, এরপর দুর্গাঅষ্টমী শেষ হলেই ছাতুর সময় কিন্তু শেষ। তাই বাকি কটা দিন চুটিয়ে এই ছাতুর স্বাদ উপভোগ করতে চাইছেন জেলাবাসী।