নিজস্ব প্রতিবেদন : শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসব (Basanta Utsav Santiniketan) নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। শান্তিনিকেতনের সেই বসন্তোৎসবের কথা বলা হচ্ছে যে বসন্তোৎসব দোলের দিন আয়োজিত হতো। এই বসন্তোৎসব আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেছিল। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এমন একটি বসন্তোৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মানুষদের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের মানুষেরাও মুখিয়ে থাকতেন।
কিন্তু করোনাকাল থেকে শান্তিনিকেতনের এমন বসন্তোৎসবে এসেছে আমূল পরিবর্তন। তার আগে ২০১৯ সালে শেষবার দোলের দিন শান্তিনিকেতনের আশ্রম মাঠে আয়োজিত হয়েছিল বসন্তোৎসব। পরবর্তীতে ২০২০ সালে করোনার জন্য এই অনুষ্ঠান পুরোপুরি ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তারপর থেকে আর দোলের দিন শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবের আয়োজন করা হয়নি।
করোনাকালের পর থেকে তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসবের আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছিলেন। দোলের দিন আয়োজিত বসন্তোৎসবকে নানান ভাবে কটাক্ষ করার পাশাপাশি তিনি এই উৎসব একেবারেই বিশ্বভারতীর পারিবারিক উৎসব বলে দাবি করেছিলেন এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি একেবারে ঘরোয়া ভাবে বসন্তোৎসব চালু করেন। আর উপাচার্যের এমন পদক্ষেপে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ থেকে অন্যান্যদের। ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল বোলপুরের আপামর জনতা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের। কেননা পৌষ মেলার মতোই শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এখানকার অর্থসামাজিক ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন ? বসন্তোৎসবের প্রাক্কালে ফাগুনের মোহনায় গানে সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপালো বাঙালি তনয়া
এসবের পর বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমল শেষ হয়ে যখন এখন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে বিশ্বভারতীর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সঞ্জয় কুমার মল্লিক, তখন অনেকের মধ্যেই আশা ছিল এবার পূর্বের মতো বসন্তোৎসব হবে শান্তিনিকেতনে। কিন্তু এই বছর এখনো পর্যন্ত যে পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে ‘সেই গুড়ে বালি’ বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এই বছরও শান্তিনিকেতনে দোলের দিন বসন্তোৎসব হবে না এমনটা ধরেই ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে পড়ুয়া থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
চলতি বছর দোল যাত্রা পড়েছে ২৫ মার্চ অর্থাৎ আগামী সোমবার। কিন্তু ঐদিন যদি বসন্তোৎসবের আয়োজন করতেই হয় তাহলে আগাম প্রস্তুতি প্রয়োজন। কিন্তু দিন দুয়েক আগে পর্যন্ত কোন রকম প্রস্তুতি শুরু হয়নি বলেই জানা গিয়েছে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের সূত্রে। এমনকি আদৌ এবার দোলের দিন বসন্তোৎসব হবে কিনা তা নিয়ে কেউ কিছু বলতেই পারছেন না। এছাড়াও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এখনো কিছু স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়নি। জানানো হয়নি দোলের দিন পূর্বের মতোই বসন্তোৎসব আয়োজিত হবে নাকি বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমলের মত বিশ্বভারতীর ঘরোয়া বসন্ত উৎসব হবে!