Establishment of Ram Mandir: রাম মন্দিরের স্বপ্ন সাকারের পিছনে রয়েছে মোদীর ৫০ বছরের লড়াই! এই গল্প অনেকেই জানেন না

Behind the Ram Mandir Establishment is Narendra Modi’s 50-year struggle: অপেক্ষার অবসান আর মাত্র কয়েকটি দিনের। ইতিমধ্যেই সাজো সাজো রব অযোধ্যা সহ মন্দির প্রাঙ্গনে। যে মন্দির স্থাপনের জন্য লড়াই চলেছে পাঁচ দশক। সেই ৫০ বছরের লড়াই সফল হতে আর বেশি বাকি নেই। যে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুরলীমনোহর জোশী, লালকৃষ্ণ আদবানি সহ বহু বিজেপি নেতা। তবে তারা নেতৃত্ব দিলেও এই মন্দির প্রতিষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদির অবদান অস্বীকার করা যায় না। মূলত তাঁর জন্যই এই লড়াই সফল হওয়ার পথে। যা অনেকেই জানেন না। অযোধ্যার রাম মন্দির প্রতিষ্ঠায় (Establishment of Ram Mandir) কি ভূমিকা রয়েছে মোদীর? ৫০ বছরে তিনি কি করেছেন? মন্দির উদ্বোধনের আগেই জেনে নিন রাম জন্মভূমির তীর্থক্ষেত্রে মোদীর অবদান।

সূত্র মারফতে জানা যায় গত শতাব্দীর ৭০ দশক থেকে রাম মন্দির আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত করেন নরেন্দ্র মোদী। সারা ভারত জুড়ে এই মন্দির আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আয়োজন করেন ছোট-বড় বিভিন্ন মিছিল, যাত্রার। সেই সময় তিনি একজন আরএসএসের স্বয়ংসেবক ছিলেন। রাম মন্দির স্থাপনের নরেন্দ্র মোদী প্রথম যে কাজ করেন তা হল মন্দির তৈরির ইট সংগ্রহ করা। সালটা ছিল ১৯৮৯। রাম শীল পূজার উৎসব চলাকালীন গুজরাটের প্রতি গ্রাম থেকে ইট সংগ্রহ করেন রাম মন্দির স্থাপনের জন্য। শুধু তাই না, এর পাশাপাশি তিনি গুজরাটের বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দেন। তার মধ্যে ‘গণ আদালতে অযোধ্যা’ নামক একটি বক্তৃতা সারা ভারতে বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। গেরুয়া দল সেই বক্তৃতা রেকর্ড করে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়। এটা ঘটেছিল ১৯৯০ সালে।

১৯৯০ সালে গুজরাটের বিজেপি দলের সভাপতি ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সময় এই রাম মন্দির স্থাপনের আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি। ওই সময় অযোধ্যার রাম রথ যাত্রার পরিচালনা করেন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি। গুজরাটের ৬০০টি গ্রাম স্পর্শ করে এই রথযাত্রা। যে যাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর। এই রাম রথ যাত্রা চলাকালীন নবরাত্রি থাকায় তিনি সারাদিন জল খেয়ে থাকতেন। যা প্রমাণ করে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি। যাত্রা চলাকালীন সর্বদিকেই নজর ছিল নরেন্দ্র মোদীর। রাম মন্দির প্রতিষ্ঠানে (Establishment of Ram Mandir) ওই সময় দিনের ১৮ ঘন্টা যা খেটেছিলেন তা কাঁদিয়েছিল লালকৃষ্ণ আদবানির স্ত্রী কমলা আদবানিকে। মোদীকে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর উত্তর এসেছিল তিনি এই জীবনই উপভোগ করেন, এটাই তাঁর জীবন।

আরও পড়ুন 👉 Biscuit Ram Mandir: রাম মন্দির উদ্বোধনের আগেই বিস্কুটের রাম মন্দির, তৈরিতে লাগল ২০ কেজি Parle G

এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। ১৯৯১ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পরিচালনায় বার হওয়া একটি মিছিলে একজন সাধারণ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই মিছিলে উপস্থিত ছিল সারা দেশের বহু রাম ভক্ত, সাধু-সন্তসহ সাধারণ মানুষ। শুধু তাই না ১৯৯৩ সালে একটি স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান হয়। যে অভিযানে রাম মন্দির স্থাপনের লড়াইয়ের সমর্থনে কতজন রয়েছে তাদের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে এই স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়। যেখানে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এই অভিযানে মোট স্বাক্ষর উঠেছিল প্রায় ১০ কোটি। তবে তার আগে ১৯৯২ সালে একতা যাত্রা সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি আবার অযোধ্যায় ফিরবেন, যখন অযোধ্যায় রাম মন্দির স্থাপন হবেন। ফলে তারপর থেকে তিনি বিশ্বাস সহ ভক্তি নিয়ে রাম মন্দির স্থাপনের লড়াই চালিয়ে গেছেন।

২০০১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত টানা গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকেও তিনি রাম মন্দির স্থাপনে লড়াইয়ে নানা দিক থেকে সহায়তা করেছেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে শুধু গুজরাট নয়, ভারতবর্ষের সেবক হিসেবে নির্বাচিত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর থেকে তাঁর আন্দোলন আর তীব্র হয়। বহু বিতর্কের পর ২০১৯ সালের ৯ই নভেম্বর অযোধ্যার সেই বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির নির্মাণের রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। নির্মাণকার্য কে পরিচালনা করবে? তার জন্য আদালত তরফে এক ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গঠিত ‘শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট’-কে এই মন্দির নির্মাণ কার্য শুরু করার অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তার যেমন কথা তেমন কাজ। ১৯৯২ সালে তিনি যে কথা দিয়েছিলেন তিন দশক পর সেই কথা রেখেছেন। ২০২০ সালের ৫ই আগস্ট অযোধ্যায় আসেন দেশ সেবক নরেন্দ্র মোদী। রাম মন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার ভূমি পূজা করেন তিনি। মন্দির তৈরিতে কোনো জটিলতা না সৃষ্টি হওয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন মোদীজি। শুধু তাই না, রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার (Establishment of Ram Mandir) পাশাপাশি অমৃত ভারত ট্রেন চালু, ৬টি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা, অযোধ্যা রেলস্টেশনের পুনর্গঠন সহ বহু কাজে প্রায় ১১, ১০০ কোটি টাকা খরচ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। খবর রয়েছে ২০২৪ সালের আগামী ২২ জানুয়ারি সোমবার অযোধ্যার রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা হবে। আমন্ত্রিত রয়েছেন দেশের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিবর্গসহ নরেন্দ্র মোদী। শুধু তাই না এদিন রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি প্রথম আরতি হবে নরেন্দ্র মোদীর হাতে।