দুর্ঘটনার আগে বিপিন রাওয়াতের কপ্টার, সামনে এলো ভিডিও

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিপিন রাওয়াতকে প্রথম দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দেশের প্রথম এই সেনা সর্বাধিনায়কের মৃত্যু হল কপ্টার দুর্ঘটনায়। গতকাল অর্থাৎ বুধবার তামিলনাড়ুর পাহাড়ঘেরা নীলগিরি জঙ্গলে ভেঙ্গে পড়ে সর্বাধিনায়কের এই কপ্টার। এই কপ্টার দুর্ঘটনায় সস্ত্রীক বিপিন রাওয়াত প্রয়াত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকোস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ।

এই কপ্টার দুর্ঘটনায় চপারে থাকা ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। এই ১৩ জনের মধ্যে আবার হাবিলদার সৎপাল রাই ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা। তিনি ছিলেন বিপিন রাওয়াতের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী। দেশের সর্বাধিনায়কের চপার এইভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঘটনায় যেমন শোকোস্তব্ধ হয়ে পড়েছে দেশ, ঠিক তেমনই বিস্মিত তারা। বিস্ময়ের পাশাপাশি উঠছে নানান প্রশ্ন, এই দুর্ঘটনার পেছনে কি রয়েছে কেবলই যান্ত্রিক ত্রুটি, নাকি অন্য কিছু!

বিপিন রাওয়াত সস্ত্রীক এদিন যোগ দিয়েছিলেন দক্ষিণের পর্যটন কেন্দ্র উটি লাগোয়া পাহাড়ি উপত্যকা ওয়েলিংটনের সেনাবাহিনীর কলেজের একটি অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য দিল্লি থেকে সকাল ন’টার সময় তিনি বিশেষ বিমানে উড়ে যান তামিলনাড়ুর বায়ুসেনা ঘাঁটি সলুরে। সেখান থেকেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত কপ্টারে রওনা দেন তারা। তার পরেই ঘটে এমন ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা।

দুর্ঘটনার পরেই দফায় দফায় শুরু হয় উচ্চপর্যায়ের আলোচনা। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনায় পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত স্তরের অলিন্দে প্রশ্ন উঠতে থাকে অত্যাধুনিক এমআই-সেভেনটিন ভি ফাইভের গুণগত মান নিয়েও। ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় সেনা। আজই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে সেনাবাহিনীর বিশেষ তদন্তকারী দল। এই তদন্তকারী দলে থাকছেন হরিয়ানা এবং পুনে থেকে আসা ফরেনসিক দলের সদস্যরা। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে এনআইএকে।

https://twitter.com/MKs_Kingdom/status/1468803107165392902?t=BJc2pmUm_BR168s1qjwErg&s=19

এই দুর্ঘটনা নিয়ে নানান প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি এর সঠিক কারণ কী তা জানা যাবে বিভাগীয় তদন্তের পরেই। তবে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গত কয়েকদিন ধরেই এই জঙ্গল এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতেও পারে। একই সঙ্গে কপ্টারের জরুরি অবতরণের বিষয়টিকেও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে কপ্টারটি ওড়ার মিনিট দশেকের মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়। তবে এই বিষয়ে ডিজিটাল অ্যানালিসিস না করা পর্যন্ত কোন উত্তর পাওয়া যাবে না বলেই দাবি করছে সেনাবাহিনী।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার ভিডিও নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ভুল ভ্রান্তি। অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হচ্ছে যেগুলির এই দুর্ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। যেমন ২০২০ সালে সিরিয়ার একটি কপ্টার দুর্ঘটনাকে বিপিন রাওয়াতের দুর্ঘটনা বলে দেখানো হচ্ছে। সেই ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভুয়ো।