New Policies for Farmers: আয় বাড়বে লাখ লাখ, এবার কৃষকদের কথা ভেবে নীতি বদল কেন্দ্রের

Prosun Kanti Das

Published on:

The central government will come up with new policies keeping farmers in mind: সম্প্রতি ভারতে আয়োজিত হয়েছিল লোকসভা ভোট। ভারতের শাসনভার নিজের দখলে রাখার লড়াইয়ে নেমেছিলেন এনডিয়ে জোট এবং ইন্ডিয়া জোট। প্রায় ২ মাস ধরে ৭ দফায় আজিত হয়েছিল ২০২৪ লোকসভা ভোট। লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করেছে এনডিয়ে জোট। ইতিমধ্যে নতুন সরকার গঠনও হয়ে গিয়েছে। আরও একবার ভারতের শাসন ভার সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। একটানা তৃতীয়বারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করেছেন তিনি। শপথ গ্রহণ করার সাথে সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাবতীয় দায়িত্ব পালনে ব্রতিও হয়েছেন। কৃষকদের উন্নতির কথা মাথায় রেখে নতুন নীতি (New Policies for Farmers) নিয়ে আসতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

লোকসভা ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এনডিএ জোটের সাহায্যে সরকার গঠন করতে হয়েছে তাদের। বিজেপির এই অবনতির কারণ হিসেবে অনেকেই উল্লেখ করছেন কৃষি ক্ষেত্রের কথা। মূলত কৃষকদের অনাস্থাই নাকি বিজেপির অবনতির অন্যতম কারণ। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে গ্রামীণ অঞ্চল থেকে ৭৫টি সিট কম পেয়েছেন বিজেপিরা। জয়লাভ করার পর সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী কেন্দ্র সরকার। খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানোর জন্য ২০২২ সাল থেকে চাল, গম, চিনির মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের রপ্তানির উপর বিধি নিষেধ জারি করেছিল কেন্দ্র। বিশেষ কিছু খাদ্যদ্রব্যের আমদানি শুল্কের পরিমাণও কমানো হয়েছিল। আর এইগুলোই পছন্দ হয়নি কৃষকদের। তারই ফলাফল ২০২৪ এর লোকসভা ভোট। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই বিপুল জনসংখ্যার মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সরকারের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকারক হতে পারে। মূল্য নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু পণ্যের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল এবং কিছু শষ্য সস্তায় আমদানি করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে আপারগ। মাঝখান থেকে ভুক্তভোগী হচ্ছে কৃষকরা। আর সেই কারণেই হয়তো কৃষকরা সরকারের উপর রেগে আছে। এমনটাই মনে করছেন কিসাণ মহা পঞ্চায়েতের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট। খুব শীঘ্রই কৃষিভিত্তিক রাজ্য হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট আয়োজিত হতে চলেছে। সেই রাজ্য ২ টির উপর নজর রেখে বেশ কিছু রপ্তানি উপযুক্ত পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের এই নতুন নীতি (New Policies for Farmers) কৃষকদের উপার্জন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।

আরও পড়ুন 👉 Farmer Loan: পিএম কিসান, কৃষকবন্ধু অতীত! এবার এক সিদ্ধান্তেই চাষীদের ঘরে ঢুকল ২ লক্ষ টাকার বেনিফিট

ভারতের কেন্দ্রীয় দায়িত্বভার মোদি সরকারের হাতে চলে যাওয়ার প্রধান কারণই ছিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। দায়িত্বে আসার পর থেকেই বিজেপি সরকার সেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু তেমনভাবে লাভ হয়নি। এখনো পর্যন্ত ফল ও সবজির অতিরিক্ত দামের কারণে ক্ষুদ্র মূল্য বৃদ্ধির হার ৮% এ এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে সুবিধা দিতে গিয়ে কৃষকরা তার ফল ভোগ করবে এটা সব সময় হতে পারে না। এই সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের আগে কৃষকদের মন জয় করার চেষ্টা করতে পারে রাজ্য। সেই উদ্দেশ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ (New Policies for Farmers) নেওয়া হতে পারে। যেমন বিশেষ ২ টি পণ্যের ক্ষেত্রে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হতে পারে। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। সর্বোপরি বেশিরভাগ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোও হতে পারে।

অর্থনীতিবিদদের মতে ভারতের যে পরিমাণ চাল মজুদ রাখার প্রয়োজন তার ৩ গুণ বেশি চাল মজুদ রয়েছে। তাই হয়তো চাল ও পেঁয়াজের উপর থেকে রপ্তানি মূলক নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হতে পারে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। ইন্ডিয়ান রাইস ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, চালের যে যোগান রয়েছে তাতে রপ্তানিতে অনুমতি দেওয়া যেতেই পারে। তাছাড়া এই বছরও উপযুক্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ফলে উৎপাদন স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা উচিত। চাল ছাড়াও একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে পেঁয়াজের রপ্তানি। মহারাষ্ট্রের যে ৮ টি এলাকার পেঁয়াজের চাষ হয়, সেই এলাকাতেই হেরেছে বর্তমান বিজিপি সরকার। কারণ হিসেবে কৃষকদের প্রতি করা অবিচারকেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া রয়েছে সোয়াবিন ও তুলো চাষিরা। কৃষকদের মন জয় করতে এই সমস্ত পণ্যের উপর রপ্তানি মূলক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আরো একবার বিবেচনা করা উচিত সরকারের (New Policies for Farmers)। তবে বিভিন্ন পণ্যের উপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য যে হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে তাতে কৃষকদের মন পাওয়া মুশকিল। গত বছর এই হার বৃদ্ধি করা হয়েছিল ৭ শতাংশ। এ বছর তা বৃদ্ধি করা হয়েছে মাত্র ৫.৪ শতাংশ।