নিজস্ব প্রতিবেদন : গাড়ি-বাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, শিল্প ইত্যাদির ক্ষেত্রে নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে দেশে করোনা অতিমারী ছড়িয়ে পড়ার আগে দেশের কোটি কোটি মানুষ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর হঠাৎ করে লকডাউন, আর এই লকডাউন চলার কারণে রোজগার যেমন কমেছে ঠিক তেমনই অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এমত অবস্থায় ঐসকল ঋণগ্রহণকারী মানুষদের মাথায় অস্বস্তির সৃষ্টি করেছিল EMI নিয়ে।
যদিও লকডাউন চলাকালীন কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল ৬ মাসের জন্য মোরাটোরিয়াম। কিন্তু এই মোরাটোরিয়ামই আবার গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ব্যাঙ্কের তরফ থেকে জানানো হয় মোরাটোরিয়ামের যে বকেয়া সুদ ছিল তার উপর আবার সুদ দিতে হবে। এতে দেখা যায় হিতে বিপরীত। কারণ পরবর্তী সময়ে সুদের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। আর এই জায়গায় এবার কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে স্বস্তি দেওয়া হল গ্রাহকদের।
কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দেওয়া হল, দু’কোটি টাকা পর্যন্ত যে সকল ঋণ রয়েছে সেই সকল ঋণের ক্ষেত্রে মোরাটোরিয়ামের মেয়াদে যে সুদ বকেয়া হয়েছে তা আর গ্রাহকদের দিতে হবে না। সরকারের তরফ থেকে সেই সুদের অর্থ বহন করা হবে।
মোরাটোরিয়ামের ৬ মাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই বকেয়া সুদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছিল। যে মামলা চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল পরবর্তী নির্দেশিকা ছাড়া কোন ঋণ গ্রহীতাকে ঋণখেলাপির তকমা দেওয়া যাবে না। এরপর ২৮শে সেপ্টেম্বর কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা ছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে আরও সাত দিন সময় দেওয়া হয় কেন্দ্র সরকারকে।
আর এর পরেই কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে সুপ্রিমকোর্টে জানানো হলো যে, মোরাটোরিয়ামের বকেয়া সুদের উপর আর সুদ দিতে হবেনা গ্রাহকদের। সরকারের তরফ থেকে হলফনামায় জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এর পরিপ্রেক্ষিতে সুরাহার রাস্তা একটাই। যদি এই খরচ সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হয় তাহলে সব পক্ষই রক্ষা পাবেন।
হিসাব করে দেখা গিয়েছে সুদের উপর যে সুদ বর্তমানে জমা পড়েছে তার পরিমাণ প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা। আর এই খরচ যদি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বহন করে থাকে তাহলে ব্যাঙ্কগুলি বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আবার যদি গ্রাহকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয় তাহলে গ্রাহকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।