নিজস্ব প্রতিবেদন : বিগত কয়েক বছর ধরে যে কটি ভাইরাসের নাম শোনা গিয়েছিলো তার সাথে বাদুড়ের যোগ ছিলো।নিপা, হেন্দ্র, ইবোলা সহ আরও অনেক ভাইরাসের বাহক ছিল বাদুড়। নিপা, হেন্দ্র, ইবোলা ছাড়াও আরও অনেক ভাইরাস বাদুড় দ্বারা সংক্রামিত হয়েছে। কয়েক বছর আগে কেরলে নিপা ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছিল। যার কারণ ছিল টেরোপাস মেডিয়াস বাদুড়। আর তা থেকেই অনেকে আশঙ্কা করতে শুরু করেন যে করোনাভাইরাসের সঙ্গেও বাদুড়ের যোগসূত্র থাকতে পারে। ৬৬ রকম ভাইরাসের বাহক হতে পারে বাদুড়। লক্ষণহীন সংক্রমণ ঘটায় এরকম ভাইরাসের বাহকও হয়ে থাকে বাদুড়! চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসে যখন জানা যায় চিনাতে এই ভাইরাস বাদুড়ের থেকেই সংক্রামিত হয়েছে!
এরপর যথারীতি ভারতেও এই নিয়ে গবেষণা চলতে থাকে। আমাদের ভারতে প্রায় ১১৭ টি প্রজাতির বাদুড় আছে। গত ১৩ এপ্রিল একটি গবেষণাপত্রে ICMR-এর গবেষকরা বলে, “বাদুড়ে করোনাভাইরাস আদৌ আছে কিনা এটি পরীক্ষা করবার জন্যই ২০১৮-১৯ সালে সংগৃহীত মেডিয়াস ও রাউসটাস প্রজাতির বাদুড়ের লালারস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চালাই আমরা। এই পরীক্ষার পর দেখা যায় যে বাদুড়ের শরীরেও করোনাভাইরাস রয়েছে। হিমাচল, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরী, কেরল-এই চার জায়গায় বাদুড়ের উপর পরীক্ষা চালিয়ে যে রিপোর্ট আসে সেখানে দুই প্রজাতির বাদুড়ের কথা জানা যায়।”
এই গবেষণাতে দুই প্রজাতির বাদুড়ের কথা বলা হয় তারা হলো ইন্ডিয়ান ফ্লাইং ফ্লক্স ও ফল খাওয়া বাদুড়। ভারতের ৩ রাজ্যে, ১ টি কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে এই ২ প্রজাতির বাদুড়ের দেহ থেকে করোনাভাইরাসের প্রমাণ মেলে। এরপরই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করে মানুষের মনে তবে কী ভারতেও বাদুড়ই সংক্রমণ ছড়ালো? এই যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেলো Indian Council of Medical Research অর্থাৎ ICMR এর
প্রতিনিধি আর গঙ্গাখেড়ার সাংবাদিক বৈঠকের পর।
#WATCH As per research in China, it was found that #Coronavirus might have originated due to mutation in bats. Bats might have transmitted it to pangolins, from pangolins it got transmitted to humans: R Gangakhedkar, Indian Council of Medical Research (ICMR) (1/2) pic.twitter.com/owq4MB9oJ7
— ANI (@ANI) April 15, 2020
বাদুড় থেকে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এমন একটা ধারনা বহুদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মধ্যেই খবর হল ভারতের ৩ রাজ্য ও ১ কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে ২ প্রজাতির বাদুড়ের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এনিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টি স্পষ্ট করলেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর প্রতিনিধি রমন (Raman Gangakhedkar) গঙ্গাখেড়ার কথায়, “চিনে যে ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে তা নিয়ে গবেষণার পর দেখা যাচ্ছে যে, বাদুড়ের মধ্যে যে ভাইরাস ছিল সেটিই মিউটেশন হয়ে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ করেছে। আবার এটাও হতে পারে যে বাদুড় থেকে ভাইরাস এসেছে প্যাঙ্গোলিনে। সেখান থেকে মানুষের দেহে ছড়িয়েছে। এরপরই এই বিষয়টি নিয়ে ভারতেবর্ষ নজরদারি শুরু করে দেয়। এরপর গবেষণাতে পাওয়া যায় ভারতে থাকা দুই প্রজাতির বাদুড়ের কথা। কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখি ভারতের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস একমাত্র বাদুড়ের শরীরের মধ্যেই থাকতে পারে। এই ভাইরাস বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হয় না। বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ানোর এই ঘটনাটি খুবই বিরল, ১০০০ বছরে হয়ত ১ বার হলেও হতে পারে।”