ঘর পেতে লাগবে কাটমানি! তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের অভিযোগ এনে জেলাশাসকের দ্বারস্থ উপভোক্তারা

হিমাদ্রি মন্ডল : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের সরকারি সুবিধার বাড়ি মেলেনি তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর এক গোষ্ঠী সর্মথকদের। অভিযোগ, ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কাটমানি দিতে হবে তবেই পাওয়া যাবে বাড়ির টাকা। আটকে রয়েছে ৫০ থেকে ৬০টি বাড়ি। পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও কাউকে জানিয়েও কাজ হয়নি, অবশেষে আজ জেলাশাসকের দ্বারস্থ সুবিধাভোগীরা।

ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের বাবুইজোর গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেখানে তৃণমূলের কেদার ঘোষের গোষ্ঠীর লোকজন তৃণমূল নেতা আব্দুর রহমানের গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধে টাকা দাবি করার এবং বাড়ি না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। ওই গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান নবদ্বীপ মন্ডল ও অন্যান্য কর্মীদের বিরুদ্ধে টাকা দাবি করার অভিযোগ রয়েছে, আর এই কাজ নাকি করা হচ্ছে আব্দুর রহমানের নির্দেশেই।

স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক মাস আগে কলকাতার একটি সভায় জানিয়েছিলেন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা জন্য গরিবদের কাছ থেকে কোনরকম কাটমানি নেওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের পর উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য কাটমানি ইস্যুতে।এরপর কাটমানি প্রসঙ্গ কিছুটা ধামাচাপা পড়লেও আজকের এই ঘটনায় নতুন করে কাটমানি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার ইঙ্গিত বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা।

তবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ি না দেওয়ার অভিযোগকে নস্যাৎ করে তৃণমূল নেতা আব্দুর রহমান, “দিনরাত পরিশ্রম করে ২৬৭ টি বাড়ির জায়গায় ২৯৭ টি বাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে। যারা সঠিক সময়ে সমস্ত নথি জমা করতে পেরেছেন তারা অবশ্যই বাড়ি পাবেন। এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নামমাত্র নেই। আর কাটমানি!স্বয়ং আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন কাটমানি নেওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে প্রমাণসহ থানায় অভিযোগ করতে। আমার অনুরোধ যারা এমন অভিযোগ আনছেন তারা প্রমান সহ থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ এবং দল তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”

তিনি এও জানান, “আমি খবর পেয়েছি যারা আজ জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন, তাদের লিস্টে বাড়ির জন্য কোন নামই নেই। যাদের নাম রয়েছে তারা অবশ্যই বাড়ি পাবেন।”

আজ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ির না পাওয়ার অভিযোগ এনে ১৫ জন সুবিধাভোগী জেলাশাসকের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা দেয়। প্রসঙ্গত এরাও মাসখানেক আগে একই অভিযোগ এনে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। যদিও সেদিন জেলাশাসক না থাকায় কোনরকম অভিযোগপত্র জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি।