‘এক দেশ, এক আইন’, পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে হাঁটতে পারে কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদন : শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের দুই প্রধান, দুই নিশান, দুই বিধান থাকতে পারে না’। আর এই বাণীকে সামনে রেখেই কেন্দ্রের মোদি সরকার ‘এক দেশ, এক আইন’ নীতি নির্ধারণের পক্ষে সাওয়াল করে। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে আসার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই নীতির পক্ষে সাওয়াল করেছেন। তবে বিরোধীদের চাপে তা এখনো হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে এই নীতিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে গ্রহণ করতে পারে কেন্দ্র।

শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্ট দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার পক্ষে সহমত পোষণ করে। আদালতের বক্তব্য, বিভিন্ন ব্যক্তিগত আইনের কারণে সমস্যায় পড়ছে দেশের যুবসমাজ। বিচারপতি প্রতিভা এম সিং জানিয়েছেন, “ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে ধর্ম, জাতি ও সম্প্রদায়ের চিরাচরিত বাধা। ভারতীয় সমাজ ক্রমশ সমজাতীয় হয়ে উঠছে। ফলে অভিন্ন দেওয়ানি নীতি আর কেবল প্রত্যাশার পর্যায়ে থাকতে পারে না।” আদালত রায়ের একটি প্রতিলিপি আইনমন্ত্রীকে পাঠিয়েছে এবং এই বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

ভারতের ভিন্ন ভিন্ন দেওয়ানী বিধির কারণে সমস্যায় পড়তে হয় বহু মানুষকেই। বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত এই সকল সমস্যা কাম্য নয় বলেই উল্লেখ করেছেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে দেশের সবথেকে লজ্জাজনক অধ্যায় শাহ বানো মামলার প্রসঙ্গ টেনে আদালতে পর্যবেক্ষণ হয় এবং বিচারপতি বলেন নব প্রজন্মকে এইভাবে এই সকল সমস্যার পথে ঠেলে দেওয়ার কোনো অর্থ হয় না।

পাশাপাশি দিল্লি হাইকোর্ট অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অর্থাৎ ‘এক দেশ, এক আইন’ কেন দরকার তার জন্য সুপ্রিমকোর্টের একাধিক মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে। পাশাপাশি আদালত জানিয়ে দেয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৪-এর মতে নাগরিকদের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তবে এই বিষয়ে কেন্দ্র এখনো পর্যন্ত কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা স্পষ্ট না হওয়ায় কেন্দ্রকে একহাত নিতেও ছাড়েন নি আদালতের বিচারপতি। পাশাপাশি বিচারপতি আইন মন্ত্রককে এর পরিপ্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।