বাঙালির ছোটবেলা শুরু হয় সহজপাঠ দিয়ে। গান কবিতা, সাহিত্য সমস্ত কিছুর মধ্যে দিয়ে বাঙালির রক্তে মিশে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। বাঙালির কাছে তিনি গর্ব, আদর্শ, ইমোশন। অন্যদিকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে প্রথম ঘুরতে যাওয়া বা বাড়ি থেকে বেরিয়ে টুক করে সমুদ্র দেখে আসা, সেখানে বিকল্প নেই দীঘার।
যদি এই দুটোকে একসঙ্গে মিলিয়ে দেন, তাহলে কেমন হবে বলুন তো? মানে বলতে চাইছি ঘুরতেও গেলেন, আবার সহজ পাঠও পড়লেন। কেমন লাগবে? একদিকে ঘোরার আনন্দ, অন্যদিকে স্কুল জীবনের স্মৃতি ফিরে আসা। শুনেই কেমন একটা রোমাঞ্চ অনুভূত হচ্ছে না? আসুন খোলসা করেই বলি তাহলে।
বিগত কয়েক মাস ধরেই সেজে উঠছে সৈকত সুন্দরী। দীঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ সাজিয়ে তুলছে দীঘা সৈকতকে। পর্যটকদের মন কেড়ে নিতে একাধিক নতুন নতুন রূপ পাচ্ছে সৈকত সুন্দরী। আর এবার সৈকত সুন্দরীর কাছেই পাওয়া যাবে নস্টালজিয়ার খোঁজ। সামনেই আসছে কবিগুরুর জন্মদিন। তাই তাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে সৈকত সুন্দরী সেজে উঠবে সহজ পাঠের ভাষায়।
ওল্ড দিঘার সৈকতাবাস আবাসনের ঠিক সামনে তৈরি হচ্ছে দিঘার প্রথম বিশ্ব বাংলা উদ্যান। সেখানে জেলাশাসকের বাংলো কল্যাণ কুঠিরের দেওয়ালে সহজ পাঠ বইয়ে রবীন্দ্রনাথের ছড়ার সঙ্গে যেভাবে নন্দলাল বসু ছবি এঁকেছেন, হুবহু সেই লেখা ও ছবিই তুলে ধরা হচ্ছে দিঘায়। বইয়ে কবিতার চেয়ে বেশি কথা বলেছে শিল্পীর ছবি। ঠিক সেভাবেই বিশ্ব বাংলা উদ্যানের দেওয়াল জুড়ে সাদা-কালো রঙে জেগে উঠছে খোকার অবয়ব, বাদল দিনের কথা ইত্যাদি। যা আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে গোটা উদ্যানের অন্দরসজ্জাকে।
সহজ পাঠের স্বরবর্ণ পর্যায়ের সবকটি লেখা ও ছবি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে পুরো দেওয়াল জুড়ে। ইতিমধ্যেই অনেকটাই এগিয়েছে সেই কাজ। বাকি কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। পর্যটকরা এসব প্রত্যক্ষ করতে পারবেন সেই ছবি। সহজ পাঠের এই চিত্রাঙ্কন পর্যটকদের আরও বেশি আবেগঘন করে তুলবে। দূশ্যদূষণ থেকেও মুক্তি মিলবে। শেষ নয় এখানেই। পর্ষদ কর্তাদের আশা, দেওয়াল জুড়ে পানের পিক কিংবা বিজ্ঞাপনী আবর্জনায় দৃশ্যদূষণ চিরাচরিত ঘটনা। এই নান্দনিক দৃশ্য তা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।