নিজস্ব প্রতিবেদন : সারমেয়রা মানুষদের সঙ্গে থাকতে থাকতে অনেক ক্ষেত্রেই তারা মানুষদের স্বভাব চরিত্র আয়ত্তে নিয়ে চলে আসে। বহুক্ষেত্রেই দেখা যায়, বাড়ির পোষ্যরা ক্ষুদেদের মতো আচরণ করছে। তবে তারা মানুষের মতো আচরণ নিজেদের স্বভাব চরিত্রের মধ্যে নিয়ে এলেও ফোন করে কাউকে কোনো বার্তা দেবে, এটা রীতিমত অবিশ্বাস্য। তাও আবার ল্যান্ড ফোন থেকে। বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে হুগলিতে।
পঞ্চায়েতের মধ্যে আটকে পড়ার পর ল্যান্ড ফোন থেকে কল করে বিদায়ী উপপ্রধানকে জানানোর এমন ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির গুপ্তিপাড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে। শনিবার রাতে এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটে এবং ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর ওই পঞ্চায়েত অফিসে বিদায়ী উপপ্রধান ও তার সঙ্গী সাথীরা এসে দরজা খুলতেই দেখা যায় ওই কুকুরটি বেরিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে।
শনিবার রাতে গুপ্তিপাড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগের মোবাইল নম্বরে হঠাৎ পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফোন আসে। রাতের বেলায় অফিস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ল্যান্ড ফোন থেকে আসা কল রীতিমতো অবাক করে বিশ্বজিৎ নাগকে। তিনি সেই সময় ফোনটি রিসিভ করেন এবং দু’তিনবার হ্যালো হ্যালো করলেও অপরপ্রান্ত থেকে কারোর কথা শুনতে পাননি। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বজিৎ নাগ আরও অবাক হয়ে কিছুক্ষণের জন্য কলটি ধরে রাখতেই অপর প্রান্ত থেকে শুনতে পান ঘেউ ঘেউ আওয়াজ।
প্রথমদিকে বিষয়টি বুঝতে না পারলেও পরে তিনি বুঝতে পেরে সটান সঙ্গীর সাথীদের নিয়ে এসে পৌঁছান পঞ্চায়েত অফিসে। তারপর সেই পঞ্চায়েত অফিসের দরজা খুলতেই দেখা যায় ওই কুকুরটি অফিস থেকে বেরিয়ে চলে যায়। নিজেকে ঘরবন্দি থেকে উদ্ধার করার জন্য এইভাবে যে কোন কুকুর ল্যান্ড ফোন থেকে ফোন করতে পারে তা রীতিমতো অবাক করা। এর পাশাপাশি এই ঘটনা নিয়ে অনেকের মধ্যেই নানান কৌতূহল তৈরি হয়েছে। তবে এমনটা সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র একটি কারণেই।
ওই কারণটি হল, পঞ্চায়েত অফিসে যে ল্যান্ডফোনটি রয়েছে সেটির সঙ্গে হটলাইন করা রয়েছে বিশ্বজিৎ নাগের মোবাইল নম্বরের। অর্থাৎ ওই ল্যান্ডফোন থেকে জরুরী ভিত্তিতে কল বিদায়ী উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগের মোবাইল নম্বরে আসে। মনে করা হচ্ছে, যখন ওই কুকুরটি পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যে আটকে যায় এবং পরে যখন সে বেরোবার জন্য লম্ফঝম্ফ শুরু করে তখন কোনোভাবে সে ল্যান্ডফোনটির সংযোগে চলে আসে। তারপর নিজে থেকেই উপপ্রধানের মোবাইল নম্বরে ফোন চলে যায়। এরপরই উপ প্রধান কুকুরের ঘেউ ঘেউ এবং কান্নার আওয়াজ শুনে অফিসে আসেন এবং ওই কুকুরটিকে উদ্ধার করেন।