মমতাই প্রথম নন, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ছিলেন যোগী-শাহ সহ একাধিক নেতানেত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কমিশনের এযাবৎ সবথেকে কড়া পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি, উস্কানি ও প্ররোচনামূলক মন্তব্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারের উপর ২৪ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে মঙ্গলবার রাত্রি আটটা পর্যন্ত।

কিন্তু এই ঘটনার পর থেকেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে সে যাই হোক কমিশনের এহেন পদক্ষেপ এই প্রথম নয়। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম এমন নিষেধাজ্ঞার শিকার নন। এর আগেও অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ সহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা এমন নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই তালিকা।

বালাসাহেব ঠাকরে : উগ্র হিন্দু নেতা হিসেবে পরিচিত শিবসেনা দলের প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের ভোটে প্রার্থী হওয়া এবং ভোট দানের উপর ৬ বছরের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। উগ্র হিন্দু নেতার প্রচারে উগ্র ভাষার প্রয়োগের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। ১৯৮৭ সালে একটি উপনির্বাচনে ধর্মীয় উস্কানিমূলক কথা বলার পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা হয় এবং সেই মামলার ঘটনা ১৯৯৫ সালে কমিশন ৬ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

ওম প্রকাশ চৌটালা : হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ চৌটালার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। ১৯৯৯ সালে তাকে ভিওয়ানি লোকসভা কেন্দ্র ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এমনকি এই নির্বাচনে তাকে ভোট দেওয়ার অনুমতিও দেয়নি কমিশন।

অমিত শাহ : দেশের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল ২০১৪ সালে। সে সময়ে নির্বাচন কমিশন অমিত শাহের সভা, রোড শো, মিছিল ইত্যাদির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

একইরকমভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানের উপর। অমিত শাহের মত তার উপর থেকেও পরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নির্বাচন কমিশন।

যোগী আদিত্যনাথ : ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথের উপর ৭২ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। ভিত্তিহীন এবং সাম্প্রদায়িক প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

একই সময়ে একই ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খানের উপরও। তার বিরুদ্ধেও একই রকম অভিযোগ ছিল।

তালিকা এখানেই শেষ নয়, নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার এই তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের (১৯৯৪) মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী সীতারাম কেশরী এবং কল্পনাথ রাই। যাদের মন্ত্রিত্ব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

[aaroporuntag]
এছাড়াও মায়াবতী, মেনকা গান্ধীর উপর ৪৮ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনে। ২০২০ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা জারি হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের উপর। তার উপর ৭২ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনে সাধ্বী প্রজ্ঞা উপরেও ৭২ ঘন্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে।