Increase Electricity Demand: প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা, দক্ষিণবঙ্গকে টেক্কা দিচ্ছে উত্তরবঙ্গ। শেষ এক বছর ধরে প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েই (Increase Electricity Demand) চলেছে। আর এই চাহিদা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে এসির ব্যবহারকে। চাহিদা বৃদ্ধির মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে উত্তরবঙ্গ টেক্কা দিচ্ছে দক্ষিণবঙ্গকেও। দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। বিদ্যুত পরিষেবা ব্যবস্থার উন্নতি করতে নতুন করে জোনাল অফিস তৈরি করতে হয়েছে মালদায়। এতদিন পর্যন্ত গোটা উত্তরবঙ্গে একটি বিদ্যুৎ জোনাল অফিস ছিল। এখন আরও একটি জোনাল অফিস তৈরি করতে বাধ্য হল বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তর। পুরনো জোনাল অফিসটি তৈরি করা হয়েছিল শিলিগুড়ি এলাকায়।
সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবহারের চাহিদা বৃদ্ধির (Increase Electricity Demand) পরিমাণ প্রায় সমান। দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা এলাকার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বীরভূমের দিকেও ৫০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুৎ চাহিদা। প্রাকৃতিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ বছর নতুন রেকর্ড তৈরি হবার ঘোষণা করা হয়েছিল অনেক দিন আগেই। সেই মতো বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই সমস্ত পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে গেছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গ। সেই তুলনায় দুই ২৪ পরগনায় বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির হার মাত্র ২৪%। রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধির হার তুলনামূলক অনেকটাই কম। ৬ থেকে ১০% এর মধ্যেই রয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
২০২২ সাল থেকে একটু একটু করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের চাহিদা বৃদ্ধি (Increase Electricity Demand) পাচ্ছে। ২০২২ সালে যেখানে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৭৮০০ মেগাওয়াট। সেখানে ২০২৩ সালে সেই চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ৯২০০ মেগাওয়াট। মাত্র ১ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট। এরপর ২০২৪ সালে এসে সমগ্র হিসাব নিকাশ ভেঙে দিয়েছে রাজ্য। ২০২৪ সালে এখনো পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ কয়েক মাসের মধ্যেই ১৩০০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। বিদ্যুত দপ্তরের এক আধিকারিকের মতে, শুধুমাত্র শহরাঞ্চলেই এসি ব্যবহার করা হয় না। বর্তমানে গ্রামাঞ্চল এমনকি ঝুপড়ি এলাকাতেও এসি ব্যবহার করতে দেখা যায়। আর সেই কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এত চাহিদা সামাল দেওয়ার কারণে নতুন করে একটি জোনাল অফিস তৈরি করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ছিল।
আরো পড়ুন: বীরভূম থেকে একমাত্র শিক্ষক হিসাবে এবার শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়
মালদায় নতুন করে জোনাল অফিস তৈরি করা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয় কিছুদিন আগে মালদায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ১০ টি জায়গায় পথ অবরোধ করা হয়। এবং সেখানকার পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। উল্টে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসে পুলিশ নাকি অবরোধ রুখতে গুলি চালিয়েছে স্থানীয়দের উপর। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই কি নতুন করে জোনাল অফিস তৈরি করার প্রয়োজন পড়ল? এর উত্তরে বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারীক জানিয়েছেন, এই ধারণা একেবারেই ভিত্তিহীন। নতুন জোনাল অফিস তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল অনেক দিন আগেই। এতদিন উত্তরবঙ্গে একটি মাত্র জোনাল অফিস ছিল তাও শিলিগুড়িতে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে সঠিক জায়গায় পরিষেবা দেওয়া সমস্যাজনক হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। আর সেই কারণে মালদাতে নতুন করে একটি জনাল অফিস তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদার (Increase Electricity Demand) কথা মাথায় রেখে সেই পরিকল্পনাকেই বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।
নতুন জোনাল অফিস তৈরি করার পর জেলা বন্টনের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। যেমন মালদার জোনাল অফিসের আওতায় রাখা হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা এলাকাটিকে। অন্যদিকে বীরভূম জেলাকে বর্ধমান জোন থেকে সরিয়ে বহরমপুর জোনে নিয়ে আসা হয়েছে। যাতে এই সমস্ত জেলাগুলিতে সঠিকভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই সমস্যা মেটাতে অন্য প্রস্তাব রেখেছে। তাদের মতে, বিদ্যুতের চাহিদা (Increase Electricity Demand) যেখানে ১০৫০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে সেখানে রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ মাত্র ৪২০০ মেগাওয়াট। যদি রাজ্যে বিদ্যুৎ তৈরির পরিমাণ বাড়ানো না হয়, তাহলে বাইরে থেকে বিদ্যুৎ এনে পরিষেবা দেওয়া কত দিন সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিশেষজ্ঞরা? এর উত্তরে বীরভূমের বক্রেশ্বরে খুব শীঘ্রই ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট তৈরি করার কথা জানিয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তর।