প্রাচীর ভেঙ্গে বিপত্তি, মর্মান্তিক দুর্ঘনায় মৃত্যু বাবা ও ছেলের

লাল্টু : মঙ্গলবার দিনভর অস্বস্তিকর গরমের পর রাতে বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকায় শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। আর এই মুষলধারে বৃষ্টি চলাকালীন বীরভূমের দুবরাজপুর শহরে প্রাচীর ভেঙ্গে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রাচীর চাপা পড়ে মৃত্যু হলো বাবা ও ছেলের। গতকাল রাতে মৃত দুজন ডাক্তার দেখিয়ে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। আর বাড়ি ফেরার পথে বাড়ি থেকে কয়েক মিটার দূরে এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হলো দুজনের। ঘটনার পর এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

মঙ্গলবার রাতের এই দুর্ঘটনায় মৃতরা হলেন সৌরভ মন্ডল (বাবা, বয়স ৪০ বছর) এবং অনিক মন্ডল (ছেলে, বয়স ১০ বছর)। তারা দুবরাজপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সারদাপল্লীর বাসিন্দা। দুর্ঘটনাটি ঘটে বাড়ির নিকটবর্তী এলাকাতেই। স্থানীয় বাসিন্দারা হঠাৎ করে কিছু পড়ে যাওয়ার বিকট আওয়াজ আর ছোট ছেলের কান্না শুনে তড়িঘড়ি বাড়ির বাইরে এসে দেখতে পান প্রাচীর চাপা পড়ে রয়েছে এলাকারই সৌরভ মন্ডল এবং তার ছেলে অনিক। সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় সৌরভ মন্ডলের। দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে অনিকের স্থানান্তরিত করা হয় সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। আর সেখানে মৃত্যু হয় তারও।

স্থানীয় বাসিন্দা শুভজিৎ মুখার্জী জানান, “গতকাল রাতে তারা দুজনে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার সময় এই প্রাচীরটি তাদের ওপর ভেঙে পড়ে যায়। আমরা বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু হাসপাতাল যাওয়ার পথেই সৌরভ মন্ডলের মৃত্যু হয়। প্রাচীরের বড় অংশ তাদের ওপর পড়ে যাওয়ার কারণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছিল গোটা শরীর। বৃষ্টির পাশাপাশি লোডশেডিং, এই দুয়ের পরিপেক্ষিতে এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে সৌরভ মন্ডলের ছেলে অনিক মন্ডলকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হলেও সেখানে আইসিইউতে ভর্তি থাকাকালীন তার মৃত্যু হয়।”

মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায়, ডিএসপি হেডকোয়ার্টার কাশীনাথ মিস্ত্রি, দুবরাজপুর থানার ইন্সপেক্টর মাধব চন্দ্র মন্ডল। তারা এলাকার স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। গতকাল রাতের এই দুর্ঘটনার পর স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা।