ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে চিকিৎসক, যুবকদের প্রচেষ্টায় সিউড়িতে ‘চলমান ডাক্তারখানা’

হিমাদ্রি মন্ডল : বর্তমান ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতিতে আরও বড় সমস্যা হলো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানো, প্রাইভেট চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসক পাওয়া। মূলত সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যেতে চাইছেন না, আবার একই কারণে অনেক প্রাইভেট চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসকরা বসতে চাইছেন না। তবে এই সঙ্কট সময়ে আম জনতাকে রক্ষা করতে সিউড়িতে এগিয়ে এলেন ৩২ জন যুবক।

উপহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে সিউড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জিষ্ণু ভট্টাচার্য এবং রামপুরহাট মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক প্রিয়ন্ত সারখেলকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিকভাবে এই পরিষেবা শুরু করা হয়েছে। ওই সংস্থার তরফ থেকে এই পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘FEVER CLINIC ON WHEELS’, যাকে সিউড়ির বাসিন্দারা বর্তমানে ‘চলমান ডাক্তার-খানা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। এই চলমান ডাক্তারখানায় যাতে করে সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা দেওয়া হয়ে থাকে তার জন্য ৩২ জন স্বেচ্ছাসেবক এই মুহূর্তে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন সংস্থার কর্ণধার প্রিয়নীল পাল।

কিভাবে চলছে এই চিকিৎসা

‘FEVER CLINIC ON WHEELS’ বা চলমান এই ডাক্তারখানার পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে একটি টোটোর মাধ্যমে। যে টোটোর মধ্যে রয়েছে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রায় সমস্ত সরঞ্জাম যেমন অক্সিজেন সিলিন্ডার, অক্সিমিটার সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী। এই টোটোটি প্রতিদিন আবেদন মত একজন করে চিকিৎসক নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন আবেদনকারীর বাড়ির দোরগোড়ায়।

তারপর সেখানে চিকিৎসকেরা সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর তার শারীরিক স্থিতি সম্পর্কে জ্ঞাত করছেন এবং ওষুধপত্র কেনার জন্য প্রেসক্রাইব করে দিচ্ছেন। যদি কারোর বাড়িতে ওষুধ কিনতে যাওয়ার মত কেউ না থাকেন তাহলে এই সংস্থার সদস্যরাই ওষুধ কিনে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও সামলাচ্ছেন। কোন রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হলে চিকিৎসক তাকে দেখে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

সুবিধা পেতে কি করতে হবে?

এই বিশেষ সুবিধা পাওয়ার জন্য একদিন আগে আবেদন করতে হবে সংস্থার তরফ থেকে দেওয়া নির্দিষ্ট দুটি ফোন নম্বর 7098641877 এবং 8250448410 এ। নাম লেখানোর সময় হল প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত। নাম লেখানো হয়ে যাওয়ার পর পরদিন চিকিৎসকের সময় মত আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট সময় জানিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।

[aaroporuntag]
সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যেহেতু বর্তমানে তাদের হাতে চিকিৎসক সংখ্যা কম রয়েছেন তাই তারা প্রতিদিন ১০ জন করে রোগী দেখছেন। আগামী দিনে এমন উদ্যোগে অন্যান্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এলে এই রোগী দেখার সংখ্যাটা অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হবে।