করোনা ভাইরাস: শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে করণীয় কিছু পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদন : দিনের পর দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে চীনের উহানে প্রাদুর্ভাব হওয়া COVID-19 বা নোভেল করোনাভাইরাস। এখনো পর্যন্ত বিশ্বের ৭০ টি দেশে এই ভাইরাস তার বিস্তার ঘটিয়েছে। এই ভাইরাসের সংক্রমনের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯০০০০-এর বেশি। ভারতও বাদ নেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে। ভারতে ইতিমধ্যেই ২৭ জনের শরীরে মিলেছে কোন ভাইরাসের সংক্রমণ, যাদের মধ্যে ১৫ জন রয়েছেন বিদেশি পর্যটক, বাকিরা সকলেই ভারতীয়। এই রোগের এখনো পর্যন্ত কোনো রকম ওষুধ অথবা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। যে কারণে এই রোগ থেকে বাঁচার উপায় একমাত্র সর্তকতা। আর আমরা বড়রা সর্তকতা অবলম্বন করে চলতে পারি সহজেই, কিন্তু শিশুদের জন্য? শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে বেশ কয়েকটি করণীয় পদক্ষেপ।

শিশুদের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব

করোনাভাইরাস একেবারে নতুন একটি ভাইরাস। কাজেই এই ভাইরাস শিশুদের ও অন্তঃসত্ত্বাদের ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে যেকোনো বয়সের মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। তবে এটাও দেখা গিয়েছে যে আক্রান্তদের সংখ্যার মধ্যে শিশুদের সংখ্যা অনেকটাই কম।

শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে করণীয় পদক্ষেপ

১) এই সময়টি হল ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার সময়। কাজেই ঠাণ্ডা অথবা সাধারণ ফ্লু-এর উপসর্গ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে যান। উদ্বিগ্ন না হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

২) শিশুদের সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার বন্দোবস্ত করুন। তাদের হাত মুখ বারবার ধোয়ার অভ্যাস করান। হাত ধোয়ার পর স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

৩) শিশুদের সঠিক সময়ে সঠিক টিকা দিয়ে রাখুন। যাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত ও ভাইরাসজনিত রোগ শিশুর শরীরে বাসা বাঁধে না পারে।

উপসর্গ দেখা দিলে কি করবেন

১) শিশুর শরীরে কোন রকম ফ্লু অথবা ঠান্ডা লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

২) বিপুল পরিমাণে লোকের সমাগম রয়েছে এমন জায়গায় পাঠানো থেকে বিরত থাকুন।

৩) শুধু শরীরে ঠান্ডা লাগা অথবা ফ্লু দেখা দিলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে রাখুন। স্কুল যাওয়া থেকে বিরত না রেখে হাইজিন মেন্টেন করার কথা শেখান।

৪) হাঁচি, কাশি পেলে শিশুকে টিস্যু পেপার অথবা হাতের কাছে থাকা রুমাল ব্যবহার করতে বলুন। আর টিস্যু পেপার ব্যবহার করলে সেই টিস্যু পেপার ডাস্টবিনে ফেলে দিন। টিস্যু পেপার যেন যত্রতত্র না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া আটকাবেন কিভাবে?

যেহেতু এই ভাইরাসের এখনো পর্যন্ত কোনো রকম ওষুধ বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি তাই এই ভাইরাস ছড়ানো আটকাতে পারে একমাত্র সচেতনতা। সাধারণ কিছু নিয়ম মেনেই এই ভাইরাস থেকে সহজেই নিরাপদে থাকা সম্ভব।

১) এই মুহূর্তে কারো সাথে হ্যান্ডশেক করার কথা ভাববেন না।

২) বারবার নিজের চোখ মুখ কানে হাত দেবেন না।

৩) খুব কম করে ২০ সেকেন্ডের জন্য ভালো করে হাত ধুবেন। CDC-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বাথরুম যাওয়ার পর, হাঁচি, কাশি হলে তারপরেও হাত ধুয়ে ফেলুন। অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। এমন স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন যাতে অন্ততপক্ষে ৬০% অ্যালকোহল থাকে।

৪) শরীর খারাপ লাগলে এসময় কোনমতেই বাড়ি থেকে বের হবেন না।

৫) যে সমস্ত ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট রয়েছে তাদের পাশে এই মুহূর্তে ঘেঁষবেন না। WHO-র তরফ থেকে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি এই মুহূর্তে হাঁচছেন অথবা কাশছেন তাদের থেকে অন্ততপক্ষে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন।

৬) রাস্তাঘাটে পশুপাখিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন, যেখানে সেখানে থুথু ফেলবেন না।

৭) অর্ধসিদ্ধ অথবা কাঁচা মাংস খাওয়ার পরিকল্পনা এই মুহূর্তে যেন না করেন।

সবাই সতর্ক থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।