গঙ্গার বুকে শুরু হচ্ছে নতুন ই-জলযান (Ganges River Transport)। কলকাতাতে মেট্রোর ধাঁচে শুরু হতে চলেছে ঝাঁ-চকচকে জল-পরিবহণ। সেজে উঠবে গঙ্গাপারের ফেরিঘাট। এমনকি জলপথে আনা হবে আরো গতিও। বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় গঙ্গাবক্ষে নামতে চলেছে অত্যাধুনিক ১৫ টি বৈদ্যুতিক জলযান। আগামী বছরের মধ্যেই এগুলো নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জলযানগুলি হবে সম্পূর্ণ বাতানুকূল, এই ভেসেলগুলোতে থাকছে অত্যাধুনিক সিট, বায়োটয়লেট ছাড়াও অনেক উন্নত সুযোগ-সুবিধা। শহর ও শহরতলির মধ্যে এই অত্যাধুনিক ভেসেলগুলো (Ganges River Transport)। গঙ্গা পারাপার করবে এরা। ২০০ থেকে ২৫০ জন যাত্রী নিয়ে যাতায়াতের জন্য বড় ভেসেলগুলো চলবে, শহরে আর শহরতলির মধ্যে চলা ভেসেলগুলোতে ১০০ জন মতো উঠতে পারবেন।
রাজ্যে পাশাপাশি কোচি শিপ ইয়ার্ডের মত তিনটি ইয়ার্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চারটি করে জেটি নিয়ে তৈরি হয় একটি ইয়ার্ড। আপাতত মিলেনিয়াম পার্ক, হাওড়া এবং চন্দননগরে এই শিপ ইয়ার্ড তৈরির কথাবার্তা এগিয়েছে। মিলেনিয়াম পার্ক, হাওড়া এবং চন্দননগরে এই শিপ ইয়ার্ড তৈরির কথাবার্তা এগিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। নবান্নর কর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের বৈঠকও হয়েছে। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গেছে, যে তিনটি শিপ ইয়ার্ড হবে তা হবে সম্পূর্ণ বাতানুকূল। সেখানেই এই ই-ভেসেলগুলো রাখা হবে, এমনকি করা হবে রক্ষণাবেক্ষণ। উল্লেখ্য, গত মাস ছয়েকের মধ্যে ২২টি নতুন ভেসেল নামানো হয়েছে।
আসলে সড়কের উপর চাপ কমাতে জলপরিবহণকে (Ganges River Transport) ঢেলে সাজাচ্ছে রাজ্য সরকার। এছাড়া বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় একাধিক পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। তাই ই-ভেসেল চালু করা তারই একটি অঙ্গ। জানা গিয়েছে যে, উন্নত মানের এইসব ভেসেলগুলোর মধ্যে মাত্র ১৩টি গঙ্গা পারাপার করবে। আর দু’টি আনা হচ্ছে ক্রুজ। সেগুলোতে থাকবে পর্যটকদের জন্য পৃথক ঘর থেকে শুরু করে ডাইনিং রুম, টয়লেট যাবতীয় সবকিছু। একটি ক্রুজ পর্যটকদের ‘ওয়ান ডে’ টুর করাবে। আরেকটি ‘ওভারনাইট’ টুর করাবে। ৭০ থেকে ৭৫ জন যাত্রী ভালোভাবেই চড়তে পারবেন। এই ক্রুজগুলো পর্যটন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বলেই নবান্নসূত্রে খবর। চলতি সপ্তাহেই বিষয়গুলো নিয়ে ই-ভেসেলের নির্মাণকারী সংস্থা, বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের। সেখানেই ঠিক হবে কোন সংস্থাকে এই বৈদ্যুতিক ভেসেল চালুর বরাত দেওয়া হবে। আবার আসতে পারে ডিজেলচালিত ভেসেল।
আরও পড়ুন : গঙ্গার নিচের পর এবার জলের উপর! চালু হচ্ছে ভারতের প্রথম ওয়াটার মেট্রো
দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন, বৈদ্যুতিক ভেসেল নামলে জলপথে দূষণের মাত্রা খুবই কম হবে। একই সঙ্গে বাড়বে গতিও। কারণ, নতুন ভেসেলগুলোর গতিবেগ এখন যেগুলো চলে তার থেকে প্রায় দ্বিগুণ। আর ক্রুজের গতিবেগ আরও অনেকটাই বেশি। তবে এত অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও, এমনকি বাতানুকূল হলেও খুব বেশি ভাড়া যাতে না দিতে হয় যাত্রীদের সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এখন গঙ্গাপার করতে যাত্রীদের লাগে ন্যূনতম ৬ টাকা। সাধারণ মধ্যবিত্তের কথা মাথায় রেখেই নয়া বৈদ্যুতিক ভেসেলর ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।