The government has brought the door deed scheme to give land deeds easily: জমির দলিল হল জমির মালিকানা দাবি করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি। কিন্তু জমির দলিল করা একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া যা অনেক সময় এবং অর্থের প্রয়োজন হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছে যার নাম “দুয়ারে দলিল”। এই প্রকল্পের অধীনে, জমির দলিল করা একটি সহজ এবং সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া হয়ে উঠবে। দুয়ারে সরকার, দুয়ারে ডাক্তারের পর দুয়ারে দলিল প্রকল্প (Duyare Dalil) যেন এক সুবর্ণ সুযোগ হাতে পাওয়া। জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশনের পেপার থেকে শুরু করে পর্চা, ট্যাক্স, খাজনা সমস্তরকম পরিষেবা আপনারা পাবেন বাড়িতে বসেই। দিনের পর দিন রেজিস্ট্রি অফিসে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকার দিন শেষ।
এই রাজ্যতে জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এমনকি তাদের অভিযোগ করতে শোনা যায়, স্থানীয় রেজিস্ট্রেশন অফিসে ঘুষ না দিলে কোনো কাজ এগোয় না। রেজিস্ট্রেশন অফিসগুলোতে দালালদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে যায় সাধারণ মানুষ। সবথেকে বড় অভিযোগ হল দুর্বল বা বয়স্ক কোনও জমি-বাড়ির মালিককে দেখলেই চাপ দিয়ে কম টাকায় জমি কিংবা বাড়ি লিখিয়ে নেয় তারা। এই ধরনের ঘটনা সত্যিই লজ্জাকর। যদি দুয়ারে দলিল (Duyare Dalil) প্রকল্প চালু হয় জমির রেজিস্ট্রেশন কপির জন্য আর কোথাও যাবার দরকার পড়বে না। বাড়িতে বসেই ডাকযোগে পেয়ে যাবেন সবকিছু। এমনকি অনলাইনে ট্যাক্স, খাজনা ইত্যাদি মেটানো যাবে।
সূত্রের মাধ্যমে জানা যায় যে, প্রত্যেক তিন মাস অন্তর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে দুয়ারে সরকার প্রকল্প বসে সেখানেই আলাদাভাবে দুয়ারে দলিল (Duyare Dalil) প্রকল্পটি বসবে এবং সাধারণ মানুষের সমস্ত রকম সমস্যার সমাধান হবে সেখান থেকে। জমি বা বাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন, পর্চা সংক্রান্ত কাজ, খাজনা, মিউটেশন সমস্ত কিছু যা যা আপনি রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে করতেন সেই একই সুবিধা পাবেন এখানে গিয়ে। দুয়ারে সরকারের বাকি প্রকল্প গুলোর পরিষেবার মত এখানেও পোস্ট অফিস মারফত আপনার বাড়িতেই পৌঁছে যাবে আপনার দলিল। বছর খানেক আগে থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে জমির দলিলের সার্টিফায়েড কপি তোলার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু জমির আসল দলিল যদি তুলতে চান তাহলে আপনাকে যেতে হবে রেজিস্ট্রেশন অফিসে আর সেখানেই যত রকম বিপত্তি। শুধু দুর্নীতি নয়, সাধারণ মানুষকে দিনের পর দিন নানাভাবে হেনস্থা হতে হয় সেখানে গিয়ে।
পরিস্থিতির বদল ঘটানোর জন্যই রাজ্য সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। বিশেষজ্ঞ টা অবশ্য মনে করছেন শুধু সাধারণ মানুষ নন রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হবে। সাধারণ মানুষ রেজিস্ট্রেশন অফিসে যাওয়ার অনিচ্ছার কারণে নিয়মিত খাজনা জমা করত না। তাছাড়া মিউটেশন, পর্চা তৈরি এগুলো না করার কারণেও সরকার বহু সম্পত্তির রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। যদি এই নতুন প্রকল্পটি (Duyare Dalil) সাধারণ মানুষকে সব রকম সুবিধা প্রদান করে তাহলে রাজ্য সরকারের রাজস্ব আদায়ের সমস্যাটিরও সমাধান ঘটবে।
এই প্রকল্পটি কবে থেকে চালু হবে সেই বিষয়ে এখন অব্দি সঠিকভাবে কোন তথ্য জানা নেই। কারণ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্থান থেকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ কবে থেকে এই পরিষেবা পাবে তা নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাড়পত্রের উপর। বর্তমানে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ সফরে রয়েছেন সেই কারণেই তিনি দেশে ফেরার পরেই এই প্রস্তাবটি পাশ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যদি মুখ্যমন্ত্রীর ছাড়পত্র পাওয়া যায় তাহলে ডিসেম্বরে যখন দুয়ারে সরকার শিবির বসবে তখনই দুয়ারে দলিল প্রকল্পটি চালু হবে বলে আশা করছে অনেকে।