নিজস্ব প্রতিবেদন : পৃথিবীর একমাত্র গ্রহ চাঁদ (Moon) রাত হলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তবে এই চাঁদকে ঘিরে রয়েছে অজস্র রহস্য। আর সেই রহস্য উদঘাটনেই বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণাগার পাড়ি দিচ্ছে চাঁদের মাটিতে। এক্ষেত্রে অনেক রহস্য উদঘাটিত হচ্ছে, আবার অনেক রহস্যই রহস্য থেকে যাচ্ছে। এমনই একাধিক রহস্য উদঘাটনে এবার চাঁদের মাটিতে অবতরণ করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগার ইসরোর চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) এবং রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)।
৬০-৭০ এর দশকে অ্যাপেলো মিশন প্রথম চাঁদের মাটিতে মানুষ নিয়ে গিয়েছিল। সেই মিশন থেকে যে সকল ছবি, ভিডিও ইত্যাদি আমরা দেখতে পায় তাতে দেখা গিয়েছে, মানুষ সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে ঘুরে হাঁটছেন। আসলে চাঁদে মানুষের ওজন অনেকটাই কমে যায় আর সেই কারণেই হাঁটলেই লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটার মত দেখায়। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এবং চাঁদের ভর কম হওয়ার কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। কিন্তু কত কম হয় এবং এর জ্যোতির্বিজ্ঞানিক কি ব্যাখ্যা রয়েছে, চলুন দেখে নেওয়া যাক।
চাঁদের ভর এবং চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কম হওয়ার কারণে মানুষ এবং অন্যান্য যেকোনো বস্তুর ওজন পৃথিবীর তুলনায় ছয় গুণ কমে যায়। তবে একেবারেই যে ছয় গুণ কমে যায় তাও কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে পৃথিবীতে যদি কোন মানুষের ওজন ৭৮ কেজি হয় তাহলে চাঁদে তার ওজন হবে মাত্র ১৩ কিলো। এই উত্তর কাছাকাছি গেলেও তা কিন্তু নিখুঁত নয়। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হল, পৃথিবীর তুলনায় চাঁদে ওজনের পার্থক্য বের করার জন্য কোন কি সূত্র রয়েছে? সেই উত্তর হবে অবশ্যই হ্যাঁ। একটি নয় বরং রয়েছে দুটি সূত্র।
প্রথম সূত্র: পৃথিবীতে একজন মানুষের ওজন × ১৬.৫ ÷ ১০০ = চাঁদে একজন মানুষের ওজন। ধরে নেওয়া যাক, পৃথিবীতে কারো ওজন ৭৮ কেজি। তাহলে চাঁদে সেই ব্যক্তির ওজন কত হবে? সূত্র অনুযায়ী, ওই ব্যক্তির ওজন হবে ৭৮ কেজি × ১৬.৫ ÷ ১০০ = ১২.৮৭ কেজি। অর্থাৎ ৬ গুণের থেকেও কম। এটিই হলো নিখুঁত উত্তর।
দ্বিতীয় সূত্র: চাঁদের ওজন = (পৃথিবীর ওজন / ৯.৮১) x ১.৬২। ৯.৮১ = পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি (মিটার প্রতি বর্গ সেকেন্ড)। ১.৬২ = চাঁদের মহাকর্ষীয় বল (মিটার প্রতি বর্গ সেকেন্ড)। এই সূত্র অনুযায়ী ওজন হবে (৭৮ কেজি / ৯.৮১) x ১.৬২ = ১২.৮৮ কেজি।