নিজস্ব প্রতিবেদন : দীঘার (Digha) সমুদ্রে এখনো চলছে ইলিশ (Ilish) ধরার জন্য তোড়জোড়। তবে সব সময় তো আর মৎস্যজীবীদের চাহিদা মত ইলিশ উঠছে না জালে। এমন অবস্থায় হামেশাই মন খারাপ হতে দেখা যাচ্ছে সমুদ্রে পাড়ি দেওয়া মৎস্যজীবীদের। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলেও এবার মৎস্যজীবীদের ইলিশের দুঃখ ভুলালো বড় বড় তেলিয়া ভোলা (Telia Bhola)। বুধবার এমন বড় বড় তেলিয়া ভোলা আনা হয় দীঘার মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে এবং সেই সকল মাছ লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়। বড় বড় ওজনের এই তেলিয়া ভোলা মাছের যা দাম উঠেছে তার রীতিমতো চমকে দেওয়ার।
সম্প্রতি ব্যান পিরিয়ড উঠে যাওয়ার পর গত কয়েকদিন ধরে দীঘায় একের পর এক নামিদামি মাছ উঠতে দেখা গিয়েছে। প্রথম দফায় বেশ কয়েকটি মাঝারি ধরনের তেলিয়া ভোলা মাছ ওঠে। এরপর আবার একটি ৭০ কিলো ওজনের শঙ্কর মাছ উঠতে দেখা যায়। পরে আবার জালে ওঠে একটি ৬ কুইন্টালের হাঙ্গর। এসবের মধ্যেই বুধবার যে সকল তেলিয়া ভোলা মাছ পাওয়া যায় তাদের ওজন হয় ২৫-৩০ কিলো।
২৫-৩০ কেজি ওজনের তেলিয়া ভোলা মাছগুলির সংখ্যা ছিল ৯টি। দীঘায় থাকা মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে আনার পর নিলামে সেগুলির ওজন হিসাবে প্রতি কিলোর দাম ওঠে ৩১ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে এক একটি মাছের দাম পাওয়া যায় প্রায় আট লক্ষ টাকা। নয়টি মাছ বিক্রি করে প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি তোলেন ওই মৎস্যজীবী যার ট্রলারে এমন মাছগুলি উঠেছিল। রাতারাতি এই নয়টি তেলিয়া ভোলা কোটিপতি করে দেয় ওই মৎস্যজীবীকে।
জানা গিয়েছে, উড়িষ্যার ধামরা থেকে এক মৎস্যজীবী এই নয়টি বড় বড় মাপের তেলিয়া ভোলা মাছ নিয়ে এসেছিলেন পূর্ব ভারতের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য নিলাম কেন্দ্র দীঘা মোহনা মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে। এই মাছগুলি আনার পরই সেগুলি দেখা এবং সেগুলি কেনার জন্য রীতিমতো হিড়িক পড়ে যায় দীঘার জিকেডি আরতে। তারপরই শুরু হয় নিলাম এবং এই বিপুল অর্থে সেগুলি বিক্রি হয়। এর আগে এত পরিমাণ দর তেলিয়া ভোলার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি বললেই চলে।
তেলিয়া ভোলা মাছের দাম এত কেন তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই কৌতুহল রয়েছে। আসলে এই মাছের এত দাম হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হলো, এই মাছের শরীরের বিভিন্ন অংশ দিয়ে জীবনদায়ী ওষুধ তৈরি করা হয়। এই মাছের পটকা ওষুধ তৈরির কাজে লাগে। এছাড়াও ক্যাপসুল তৈরির জন্য এই মাছের পটকা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। পাশাপাশি এই মাসে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিদেশে এবং সেই মতো বিদেশেও এই মাছ রফতানি করা হয়।