রং দিলেই করতে হবে বিয়ে, আজব নিয়ম যুগ যুগ ধরে চলছে এই গ্রামে

গত কাল রংয়ের উৎসবে মেতেছিল দেশ তথা রাজ্যবাসী৷ কিন্তু আলিপুরদুয়ারের (Alipuduar) তুরতুরি গ্রামের আদিবাসী সমাজে রং খেললেই বিপদ। সেখানে কোনও মেয়ের গায়ে রং (Holi Celebration) দিলেই তাকে বিয়ে করতে হবে আর সঙ্গে দিতে হবে জরিমানা। তাই রংয়ের দিনে রং খেলে না তারা।

গোটা দেশজুড়ে যখন মানুষ রংয়ের খেলায় মেতেছেন সেখানে এই গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরকে জল দিয়ে হোলি (Holi) খেললেন। জানা গিয়েছে এই গ্রামে প্রচুর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ কখনওই রং দিয়ে হোলি (Holi) খেলেন না। এমন কী জল দিয়ে হোলি খেলেন অনেকে। আর অনন্তকাল ধরে চলে আসছে আদিবাসী সমাজের এই কঠোর রীতি।

গ্রামবাসীরা জানান দোলের দিন কোনও মেয়ের গায়ে রং লাগালেই বিয়ে করতে হবে তাকে। তাই তুরতুরি গ্রামে রঙের বদলে খেলা হয় জল। একে অপরকে জলে ভিজিয়ে দিয়েই পালন করা হয় হোলি (Holi)। তুরতুরি গ্রামের সাঁওতাল, মুণ্ডা সমাজের ছেলে-মেয়েরা হোলি খেলার দিন আর পাঁচজনের মতো আনন্দ নেয় একে অপরকে জল দিয়ে ভিজিয়ে। তুরতুরি গ্রামের দুর্গা হাঁসদা জানান, আদি অনন্তকাল থেকে তাঁদের সমাজে এই নিয়ম হয়ে আসছে। হোলির দিন এখানে কোনও মেয়েকে রং দেওয়া যাবে না।

তিনি আরও জানান, যদি কোনও ছেলে ভুল করে কোনও মেয়েকে রং লাগিয়ে দেয়, তাহলে তাকে সেই মেয়েকে বিয়ে করতেই হবে। আর যদি ছেলেটি বিয়ে করতে রাজি না-হয় তাহলে তাকে জরিমানা দিতে হবে। আর জরিমানা হিসেবে কখনও পাঁঠাবলি বা মোটা অংকের টাকা চেয়ে থাকে তাদের সমাজ।

সেই কারণে হোলির সময় তাদের গ্রামের ছেলেরা জঙ্গলে যায় শিকার করতে। শিকার করে যা আনে তা দিয়েই সেদিনের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এখন জঙ্গলে কড়া আইনের গেরোয় তারা আর বন্যপ্রাণী হত্যা করে না। বাড়িতেই তিরধনুক দিয়ে মুরগি শিকার করে তারা। আর এই ভাবেই তারা পালন করে তাদের এক একটা হোলি (Holi)।