It is one of the countries in the world where Internet and buses are available for free: ইন্টারনেট এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্ট দুটোই যদি ফ্রিতে পাওয়া যায় তাহলে জীবনযাপন অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। বর্তমানে নিত্যদিনের খরচের তালিকা তে এই দুটি থাকে সবার উপরে। আর যদি কোন রাষ্ট্র এই খরচ বহন করে তাহলে তো আর কথাই নেই। কিন্তু এইসব আশ্চর্যজনক কথা আদৌ কি সম্ভব? আপনি বিনোদনের কিংবা কাজের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার (Free Internet) করবেন কিংবা পেট্রোল ও ডিজেল পুড়িয়ে পরিবহন ব্যবহার করবেন সেই ভাড়া কি সরকার থেকে দেবে? এমন রূপকথার দেশ কি এই পৃথিবীতে আছে?
শুনতে অবাক লাগলেও কথাটি একেবারে সত্যি, এরকম দেশ এই বিশ্বে রয়েছে। যেই দেশের অধিবাসীরা শুধুমাত্র বিনামূল্যে ইন্টারনেট (Free Internet) ব্যবহার করেন তাই নয়, একেবারে বিনা খরচে পরিবহন ব্যবস্থাও ব্যবহার করতে পারেন। এই আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে আজ থেকে ২৪ বছর আগে ২০০০ সালে। এই দেশের সমস্ত স্কুল এবং কলেজে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সরবরাহ করা হয়। এখানকার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেন। নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে দেশটির নাম কি?
দেশটির নাম হল এস্তোনিয়া৷ ইউরোপ মহাদেশের একটি ছোট্ট দেশ যেখানকার অধিবাসীরা বিনামূল্যে ইন্টারনেটের (Free Internet) সুবিধা নিতে পারেন এবং পরিবহন ব্যবস্থাও একেবারে বিনামূল্যে পান। যা বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী দেশের পক্ষে চিন্তা করাও একেবারে অসম্ভব।। এখানে অনলাইনে প্রতিটি সুবিধা পাওয়া যায়। ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অর্থ প্রদান সবই হয় ইন্টারনেটে৷ এস্তোনিয়ান নাগরিকরাও অনলাইনে অর্থ প্রদান করে। সারা বিশ্বে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এস্তোনিয়া একটি মডেল দেশ। এই দেশটি অবস্থিত ইউরোপের উত্তর-পূর্বে বাল্টিক সাগরের পূর্ব উপকূলে, একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে এই দেশ রাশিয়া থেকে পৃথক হয়। পৃথক হবার পর এখানকার আর্থিক উন্নতি হয়েছে দুর্দান্তভাবে।
ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে শুরু করে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সর্বক্ষেত্রেই এরকম সুবিধা সত্যিই আর কোন দেশে আছে কিনা জানা নেই। ২০১৩ সালে দেশটির রাজধানী তালিনের তৎকালীন মেয়র এডগার সাভিসার প্রথম এই বিনামূল্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের পরিষেবা চালু করেন। এই ব্যবস্থার পেছনে তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, রাশিয়ার অংশ থাকাকালীন দেশটির মধ্যে নানারকম বিভেদ ছিল। তাই পৃথক হবার পর যাতে এদের মধ্যে মেলামেশার সুযোগ ভালোভাবে হয় তার জন্যই এই সুযোগ করে দেওয়া।
প্রথমবার যখন বিনামূল্যে পরিবহণের জন্য গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল তখন বিপুল সমর্থন করেছিল এখানকার জনগণ। বাস এবং ট্রামগুলি জনসাধারণের জন্য বিনামূল্যে করা হয়েছিল। বর্তমানে শুধুমাত্র এস্তোনিয়া নয় ফ্রান্স ও জার্মানিও বায়ু দূষণ মোকাবিলায় গণপরিবহণ বিনামূল্যে করার কথা চিন্তাভাবনা করছে। এমনকি যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বিনামূল্যে বাস চলে। আসলে এস্তোনিয়ার অর্থনৈতিক মন্ত্রণালয়ের প্রধান লক্ষ্য ছিল যাতে দেশের প্রতিটি নাগরিক আগামী এক বছরের মধ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বিনামূল্যে (Free Internet) শিখতে পারে। এখানে ৩ হাজারের বেশি ফ্রি ওয়াই-ফাই স্পট রয়েছে। কফি শপ, পেট্রোল পাম্প, রেস্তোরাঁ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, হোটেল এবং সমস্ত সরকারি অফিসে বিনামূল্যে Wi-Fi রয়েছে। জানলে অবাক হবেন ভোটদান প্রক্রিয়াও এই দেশে হয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
বিশ্বের মধ্যে যদি বিশুদ্ধ বাতাস কোন দেশে আছে সেই সম্পর্কে বলা হয় তাহলেও নাম উঠে আসবে এস্তোনিয়ার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গত বছর প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, এস্তোনিয়া এমন একটি দেশ যেখানে বায়ু গুণগত মান অত্যন্ত ভালো। পাশাপাশি তালিকায় নাম রয়েছে ফিনল্যান্ড, সুইডেন, কানাডা, নরওয়ে ও আইসল্যান্ডের। ভারতের পাশাপাশি উগান্ডা, মঙ্গোলিয়া, কাতার এবং ক্যামেরুনের নাম আছে সবচেয়ে খারাপ বায়ুর মানের দেশগুলির মধ্যে।