Hussainiwala: একটি গ্রাম পেতে পাকিস্তানকে ১২টি গ্রাম দিতে হয়েছিল ভারতকে! এই গ্রামেই লুকিয়ে দেশের মান-ইজ্জত

India donated twelve villages to Pakistan to get Hussainiwala village: মাত্র একটি গ্রামকে নিজেদের দেশে পাবার জন্য তার বিনিময়ে ১২ টি গ্রাম পাকিস্তানকে দান করেছিল ভারতবর্ষ। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার অন্তর্গত ফিরোজপুর শহর থেকে একটু দূরে ভারত পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত এই গ্রাম হুসেইনিওয়ালা (Hussainiwala)। শতদ্রু নদীর দুইপাশে অবস্থিত দুটি গ্রাম একপাশে রয়েছে হুসেইনিওয়ালা ও অন্য পাশে রয়েছে গন্ডা সিং ওয়ালা গ্রাম। আর এর মাঝেই রয়েছে লুক্কায়িত ইতিহাস।

স্বাধীনতার আগে দেশভাগের সময়ে হুসেইনিওয়ালা (Hussainiwala) গ্রামটিও পাকিস্তানের মধ্যেই ছিল। কিন্তু ভারত সরকার তা চাইনি। এই গ্রামটিকে তারা নিজেদের দেশে রাখতে চেয়েছিল। তাই, পাকিস্তানের সাথে অনেক আলোচনার পর পাঞ্জাবের আরো ১২ টি গ্রামের বদলে হুসেইনিওয়ালাকে নিজের দেশে ফেরত নিয়ে আসে ভারত বর্ষ। এই গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে সেখানকার বিখ্যাত পীর গুলাম হুসেইনিওয়ালার নাম থেকে। তাঁর সমাধি এখনো পাঞ্জাবের বিএসএফ ক্যাম্পে গেলে দেখা যায়। এই গ্রামটির ঠিক পাশেই শতদ্রু নদীর আরেক পাশে রয়েছে গন্ডা সিং ওয়ালা গ্রাম যা বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত। এই গ্রামটির নামকরণ ও করা হয়েছিল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয় শিক সৈনিক বীর গন্ডাসিং দত্তের নামে।

কিন্তু শুধুমাত্র পীর বাবার জন্য নয়, হুসেইনিওয়ালা (Hussainiwala) গ্রামটি ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। শোনা যায়, ভগৎ সিং, রাজগুরু ও সুখদেবকে লাহোর জেলে ফাঁসি দেবার পরের দিন সন্ধ্যায় লুকিয়ে তাদের দেহ সৎকারের জন্য শতদ্রু নদীর ধারে এই হুসেইনিওয়ালা গ্রামে নিয়ে যায় ব্রিটিশ সরকার। দিনটি ছিল ১৯৩১ সালের ২৩ শে মার্চ।

আরও পড়ুন 👉 Indian Railways Stolen Case: মোটা টাকায় টিকিট কেটেও শান্তি নেই! রেলে দিন দিন চুরি বাড়ছে এসি কামরায়

কিন্তু ঘটনাচক্রে এই খবর পৌঁছে যায় হুসেইনিওয়ালা (Hussainiwala) গ্রামের গ্রামবাসীদের কাছে। তারা খবর পেয়েই সদলবলে গ্রামের শ্মশানে হাজির হয়। এতগুলো গ্রামবাসীকে একসাথে আসতে দেখে তিন বিপ্লবীর দেহ ফেলে রেখে ভয়ে পালিয়ে যায় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী। এরপর সেখানেই সেই তিন বিপ্লবীর দেহ সসম্মানে সৎকার করে গ্রামবাসীরা।

সেই থেকে আজ অব্দি প্রতি বছর ২৩ মার্চ ভগৎ সিং, রাজগুরু ও সুখদেবের উত্তরাধিকারদের সম্মান জানাতে ভারত পাকিস্তানের সীমান্তে এই হুসেইনিওয়ালা গ্রামে জড়ো হয় বহু মানুষ। এখানেই তৈরি করা হয়েছে হুসেইনিওয়ালা ন্যাশনাল ম্যাট্রিস মেমোরিয়াল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে যুক্ত এই ঐতিহাসিক গ্রামটিকে কোনমতেই পাকিস্তানের হাতে ছেড়ে দিতে পারিনি ভারতবর্ষ। আর তাই ১২ টি গ্রাম দান করার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধাবোধ করেনি আমাদের দেশ।