Indian Railways: আজব রেলস্টেশন! যেখানে ১০টি টিকিট কাটেন যাত্রীরা

বিশ্বের বৃহত্তম রেল ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে ভারতীয় রেলের (Indian Railways) নাম অন্যতম। ভারতীয় রেল দেশের প্রতিটি কোনায় পৌঁছে গেছে এমনকি সবথেকে দুর্গম স্থানগুলিতেও। গণপরিবহনের মধ্যে রেল ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে আপনি কি জানেন ভারতীয় রেলের (Indian Railways) সাথে জড়িয়ে আছে বহু অজানা ও আশ্চর্য কাহিনী। এই রশিদপুর খোরি স্টেশনটি রাজস্থানে অবস্থিত, যেখানে প্রত্যেককে কাটতে হয় দশটি করে টিকিট। একমাত্র এই স্টেশনের জন্যই গ্রামবাসীরা অধিকারের লড়াই করেছিল, আজ শোনা হবে সেই কাহিনী।

কোনো এক সময় এই রেল স্টেশনটির অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। কিন্তু ট্রেন ওখানে থামার জন্য গ্রামবাসীরা কিছু সুবিধা পেতেন। ২০০৫ সালে স্টেশনটি তুলে দেবে বলে রেল সিদ্ধান্ত নেয়, কারণ এই স্টেশন থেকে কোনরকম লাভই হচ্ছিল না। ফলে ট্রেন চললেও এই স্টেশনটিতে দাঁড়াতো না।ফলে গ্রামবাসীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তির মুখে। বিশেষ করে অসুবিধা হয়েছিল পড়ুয়াদের। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন করেছিল।

বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় রেলের (Indian Railways) আধিকারিকরা পর্যন্ত গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে শর্ত দেওয়া হয় যে, এক বছরে যদি ৩ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়, তবেই আবার স্টেশনে ট্রেন থামতে শুরু করবে। নিতান্ত একটি সাধারণ ও গরিব গ্রামের পক্ষে ৩ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি মানে সত্যি খুব কঠিন ব্যাপার। অসহায় গ্রামবাসীরা এই শর্তে রাজি হয়ে যায়। এই কঠিন কাজটি তারা সকলে মিলে সম্পন্ন করে। সত্যি ৩ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। ২০০৯ সাল থেকে আবারও ট্রেন থামতে থাকে ওই স্টেশনে। তবু রেলের পক্ষে স্টেশনটি পুরোপুরিভাবে চালানো সম্ভব ছিল না। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে এক কাণ্ড করেন গ্রামবাসীরা।

ভারতীয় রেলের (Indian Railways) এতবড় ক্ষতি এড়ানোর জন্য গ্রামবাসীরা প্রত্যেকে ১০টি করে টিকিট কিনতে শুরু করেন। সাথে নজর রাখা হয় যাতে কোনও যাত্রী বিনা টিকিটে যাতায়াত করতে না পারে। তবে যখন ট্রেন থামতে শুরু করে স্টেশনের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে গ্রামবাসীদের উপরেই। শুধু স্টেশনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই নয় পাশাপাশি জলের ব্যবস্থাও করেন গ্রামবাসীরা। যেসব যাত্রীরা টিকিট কাটতো না তাদেরকে টিকিট কাটানোর দায়িত্ব গ্রামবাসীরা নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়।

গ্রামবাসীরা টানা ২০২০ সাল পর্যন্ত এই কাজ করে গিয়েছিলেন। তবে ভারতীয় রেল (Indian Railways) ২০২১ সালে স্টেশনটির দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেয়। স্টেশনটি বহু বছর ধরেই রেলের খাতায় স্পেশাল স্টেশন হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিল। কারণ স্টেশনটিতে কোনও রেল কর্মী না থাকলেও ট্রেন চলত সময় মতন।