কূটনৈতিক স্তরে বিশাল সুকৌশলী পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। নরেন্দ্র মোদির এই পদক্ষেপ ভাবিয়ে তুলেছে ড্রাগনের দেশ চীনকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তার টিম যে পদক্ষেপ করেছে, তাতে ভারতের নজর এড়িয়ে চীন আর সীমান্তে কিছুই করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী এমন সুকৌশলী পদক্ষেপ ঐতিহাসিক বলে মত দিচ্ছে কূটনৈতিক মহল। একইসঙ্গে বদল হচ্ছে ভারতের ইতিহাসেও।
আচ্ছা আপনি কি জানেন ভারতের শেষ গ্রাম কোনটি? নিশ্চয়ই জানেন। হয়তো বা কেউ কেউ ভারতের শেষ গ্রাম চাক্ষুসও করে এসেছেন। কিন্তু আপনার ভ্রমণ স্থলের তালিকায় থাকা এই জায়গাটি আর ভারতের শেষ গ্রাম নয়। বদলে গেল ভারতের শেষ গ্রামের নাম। নেপথ্যে কূটনৈতিক কলাকৌশল রয়েছে বলেই ধারণা। অন্ততপক্ষে দুঁদে কূটনৈতিক এবং বিদেশ মন্ত্রকের কর্মীরা তেমনটাই মনে করছেন। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক আসল গল্পটা।
উত্তরাখণ্ডের ছোট্ট একটা গ্রাম ‘মানা’। পর্যটকদের কাছে এটা ‘ভারতের শেষ গ্রাম’ হিসেবেই পরিচিত। তবে সম্প্রতি বর্ডার রোড অর্গনাইজেশন এই গ্রামের বাইরেই নতুন এক সাইনবোর্ড বসাল। তাতে লেখা – ‘ভারতের প্রথম গ্রাম’। বিগত কয়েক বছর ধরেই ভারত-চিন সীমান্তে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। লাদাখ থেকে অরুণাচলে বারংবার মুখোমুখি হয়েছে দুই দেশের সেনা। উত্তরাখণ্ডে অবশ্য সেরকম কিছু এখনও ঘটেনি। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বারবার বলে এসেছে যে ভারতের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না। এরই মধ্যে ভারত-চিন সীমান্তে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে অবশ্য আপত্তি আছে চিনেক। এই আবহে ‘মানা’-কে ভারতের ‘প্রথম গ্রাম’ হিসেবে তুলে ধরে চিনকেই বার্তা দেওয়া হলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই সাইনবোর্ড নিয়ে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘এখন থেকে মানাকে আর ভারতের শেষ গ্রাম নয় বরং প্রথম গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।’ এর আগে গতবছর অক্টোবরে চমোলিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ভারতের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে আমরা সাধারণত শেষ গ্রাম হিসেবে চিনে থাকি। তবে আদতে সেগুলি ভারতের প্রথম গ্রাম।’ এই আবহে ‘মানা’-তে নয়া সাইনবোর্ড প্রসঙ্গে ধামি টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘আমাদের সরকার সীমান্তবর্তী এলাকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য বদ্ধপরিকর।’
উল্লেখ্য, বদ্রিনাথ ধামের খুব কাছেই অবস্থিত এই ‘মানা’ গ্রাম। যেসব পর্যটক বদ্রিনাথ ঘুরতে যান, তাঁরা সাধারণত হিমালয়ের কোলে ছোট্ট এই গ্রামেও পা রাখেন। বদ্রিনাথ থেকে এই গ্রামের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই গ্রামে মোট ৫৫৮টি পরিবার রয়েছে। মোট ১২১৪ জনের বাস ছিল এই গ্রামে। মূলত মারছাস এবং ভুটিয়া জনজাতির মানুষরাই থাকেন এই গ্রামে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রাম। শীতকালে পুরো বরফের চাদরে ঢাকা পড়ে যায় এই গ্রাম। তাই সেই সময় এই গ্রামের গোটা জনসংখ্যা নীচে নেমে আসে।