Jain Monks: এই সন্ন্যাসীদের চরম কষ্ট, আজীবন থাকতে হয় স্নান না করেই, জানুন কেন

Jain monks never bathe throughout the year: প্রাচীনকালে আমাদের ভারতবর্ষে চতুরাশ্রম প্রথা অনুসারে গার্হস্থ্য জীবন শেষ করে বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস গ্রহণ করার রীতি প্রচলিত ছিল। পরবর্তীকালে এই প্রথা গুলি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমন এক সম্প্রদায়ের মানুষরা আজও আছেন যারা কঠোর কৃচ্ছ সাধনের মাধ্যমে নিজেদের সন্ন্যাস জীবন পালন করে থাকেন। তারা আসলে জৈন ধর্মাবলম্বী মানুষ। জৈন ধর্মে মূলত দুটি শাখা আছে, একটি হল দিগম্বর এবং অপরটি শ্বেতাম্বর। জৈন ধর্মাবলম্বী এই দুটি শাখার সাধুরাই (Jain Monks) দিক্ষা গ্রহণ করার পর থেকে কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে জীবনযাপন করে থাকেন। জেনে নিন তাদের এই কষ্টসাধ্য জীবনে পালন করা কয়েকটি বিশেষ নিয়ম সম্পর্কে।

১) জৈন শ্বেতাম্বর সাধুদের (Jain Monks) পোশাক কেবলমাত্র একটি পাতলা সুতির কাপড়। এই সাধুরা শীতকালে গায়ে দেওয়ার জন্য অতি পাতলা হলেও একটি করে কম্বল রাখেন। তবে দিগম্বর সাধুরা সারা বছর এমনকি প্রবল ঠান্ডাতেও কোনো রকম পোশাক পরেন না।

২) জৈন সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসীরা (Jain Monks) কোনো সময় জীব হত্যা করতে পছন্দ করেন না। আর এই কারণেই তারা সারা বছরে কখনো স্নান করেন না। কারণ তারা বিশ্বাস করেন স্নান করলেই দেহের মধ্যে থাকা সমস্ত ধরনের জীবাণুর মৃত্যু ঘটবে অর্থাৎ তাদের দ্বারা প্রাণী হত্যা হবে। এছাড়াও তারা সর্বদা তাদের মুখে একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন যাতে মুখ দিয়ে শরীরে কোনো জীবাণু প্রবেশ করতে না পারে।

৩) কঠোর কৃচ্ছ সাধনের জীবনে সাধুদের ঘুমানোর জন্য খুবই কম সময় বরাদ্দ করা থাকে। জৈন ধর্মাবলম্বী দুটি শাখার সন্ন্যাসী সন্ন্যাসিনীরা যে কোনো ঋতুতেই মাটিতে শুয়ে ঘুমান। কোনো রকম বিছানা তারা ব্যাবহার করেন না। অনেক সময় ঘুমানোর জন্য তারা ব্যবহার করেন মাদুর আবার অনেক সময়ে শুকনো ঘাসও ব্যবহার করা হয় তা বিছিয়ে ঘুমানোর জন্য।

৪) এই সম্প্রদায়ের সাধুরা (Jain Monks) তাদের স্নানকে জ্ঞানের পরিধিতে অন্য রকম ভাবে বিশ্লেষণ করেন। তাদের মতে স্নান দুই প্রকার। বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ। সাধারণ মানুষ জল দিয়ে বাহ্যিক স্নান সারেন। জৈন সন্ন্যাসীরা সাধনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ স্নান করেন অর্থাৎ দেহ ও মনকে শুদ্ধ করেন। তাদের কাছে এই স্নান হলো তাদের আবেগের শুদ্ধিকরণ।

আরও পড়ুন 👉 গাছেই কাটিয়েছেন ১৭ বছর, সাপকেও ভয় পান না এই সন্ন্যাসী

৫) নিজেদের শরীর পরিষ্কার ও সতেজ রাখতে জৈন সাধুরা কয়েক দিন পর পর একটি ভেজা কাপড় নিয়ে শরীর মুছে নেন।

৬) জৈন ধর্মাবলম্বী সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীরা জৈন মন্দির সংলগ্ন মঠে বাস করেন। জীবন থেকে সমস্ত ভোগ্য বস্তু দূরে সরিয়ে রেখে তারা কঠোর নিয়ম পালন করে চলেন। নিজেদের পরিমিত আহার ও আশ্রয় তারা নিজেরা জোগাড় করে নেন। কোনো ভোগ্য বস্তুর প্রতি আবেগ বা আকাঙ্খা তাদের জীবনকে স্পর্শ করতে পারে না।