Bandhan Bank: ধারের ২ লক্ষ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা, বন্ধন ব্যাঙ্ক পথ চলা অনুপ্রেরণা দেবে আপনাকেও

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : শুক্রবার বন্ধন ব্যাঙ্কের (Bandhan Bank) এমডি ও সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ নিজের পদ থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার ঘোষণা করেছেন। আগামী ৯ জুলাই থেকে তিনি আর এই পদে থাকবেন না, পরিবর্তে বন্ধন গোষ্ঠীর নীতি ও কৌশল নির্ধারণকারীর ভূমিকায় কাজ করবেন। এই চন্দ্রশেখর ঘোষের হাত ধরেই শুরু হয়েছে বন্ধন ব্যাঙ্ক। তিনি এই ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা। তবে যতটা সহজ ভাবা হচ্ছে ততটা সহজভাবে কিন্তু এই ব্যাংক পথচলা শুরু করেনি। পরের কাছে টাকা ধার নিয়ে চন্দ্রশেখর ঘোষ শুরু তার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য নেমেছিলেন।

Advertisements

এখন ঘরে ঘরে পরিচিত একটি ব্যাংকের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে বন্ধন ব্যাংক। সারা দেশের ৩৫ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৬২৬২টি বন্ধন ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এই মুহূর্তে তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। বন্ধন ব্যাংকে ৭৫ হাজার কর্মী বর্তমানে কাজ করেন। ব্যাংকের মূলধন এখন ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তবে ভারতের ব্যাংকিং সেক্টরে বন্ধন ব্যাংকের মতো ব্যাংকের উত্থান একেবারেই আলাদা।

Advertisements

ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রশেখর ঘোষ ১৯৬০ সালে ত্রিপুরার আগরতলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। চন্দ্রশেখর ঘোষের বাবার একটি মিষ্টির দোকান ছিল। তবে সেই মিষ্টির দোকান খুব যে জনপ্রিয় ছিল তা নয়। যে কারণে ছোট থেকেই আর্থিক অনটন পিছন পিছন ঘুরে বেড়াতো চন্দ্রশেখর ঘোষের। তবে এই আর্থিক অনটন তার কোনদিন নিজের লক্ষ্য পূরণ নিয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তিনি নিজে দুধ বিক্রি করতেন এবং তার সঙ্গে সঙ্গেই পড়াশোনা চালিয়েছিলেন।

Advertisements

চন্দ্রশেখর ঘোষ স্কুলের গন্ডিতের করে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে স্ট্যাটিস্টিক্সে স্নাতক হন। কলেজে পড়াশোনা চালানোর জন্য তিনি আশ্রমে থাকতেন এবং সেখানে শিশুদের পড়াতেন। এরপর ১৯৮৫ সালে তিনি ঢাকার একটি অলাভজনক সংস্থায় চাকরি পান এবং তারপর থেকেই তার জীবনে নতুন মোড় শুরু হয়। সেখানেই কাজ করার সময়ই তিনি অনুপ্রাণিত হন। এরপর ১৯৮৭ সালে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। কাজ শুরু করেন গ্রামোন্নয়ন সোসাইটিতে।

আরও পড়ুন ? UPI Cash Deposit: ব্যাঙ্কে যাওয়ার দিন শেষ! এবার UPI-এর মাধ্যমেই অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে টাকা

পরবর্তীতে তার মধ্যে নিজের সংস্থা তৈরি করার স্বপ্ন তৈরি হয় এবং তিনি সেই স্বপ্ন ২০০১ সালে পূরণ করেন মাইক্রো ফাইনান্স তৈরি করে। যে সংস্থার নাম তিনি দিয়েছিলেন বন্ধন। এই সংস্থার কাজ ছিল মহিলাদের ঋণ দেওয়া। মহিলাদের ঋণ দেওয়ার জন্য আত্মীয়-স্বজনদের থেকে ২ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। মাত্র ১২ জন কর্মীকে নিয়ে কাজ শুরু করার পর ২০০২ সালের মধ্যেই তার সংস্থা ১১০০ মহিলাকে ১৫ লক্ষ টাকা ঋণ দেয়। দেখতে দেখতে বড় হতে থাকে বন্ধন মাইক্রো ফাইনান্স।

২০০৯ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অধীনে নন-ব্যাঙ্কিং ফাইন্যান্স হিসাবে রেজিস্টার্ড হয় বন্ধন। দেখতে দেখতে এই সংস্থা ৮০ লক্ষ মহিলাকে ঋণ দিতে সক্ষম হয়। এই বিপুলসংখ্যক মহিলাকে ঋণ দেওয়া বন্ধন ব্যাঙ্কের লক্ষ্যের ক্ষেত্রে নতুন এক মাইলস্টোন পার করে। এরই মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২০১৩ সালে ব্যাংক তৈরির জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু করে এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বন্ধন ব্যাংক তৈরি করার জন্য আবেদন করা হয়। এরপরই ২০১৫ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অনুমোদন দিলে বন্ধন নন ব্যাঙ্কিং ফাইনান্স নতুন নাম পায় বন্ধন ব্যাঙ্ক।

Advertisements