নিজস্ব প্রতিবেদন : যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআই রাজ্যের তাবর তাবড় নেতা মন্ত্রী, বিধায়কদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন নি, সেই এডিকে শুক্রবার বাধার মুখে পড়তে হলো সন্দেশখালিতে। এমন বাধার মুখে পড়তে হয় সামান্য একজন তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে। এদিনের এই ঘটনা রাজ্যের মধ্যে প্রথম, আগে এর মত ঘটনা কোথাও ঘটতে দেখা যায়নি। এদিন এমন বাধার মুখে ইডি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পড়তে হয় শাহজাহান শেখের (Shahjahan Sheikh) বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে।
শুধু তল্লাশি চালাতে গিয়ে বাধার মুখোমুখি নন, পাশাপাশি ওই তৃণমূল নেতার অনুগামীদের বিক্ষোভ চলাকালীন ইডি আধিকারিকদের মাথা ফেটেছে বলেও সূত্রের খবর। এমন ঘটনা সূত্রপাত শুক্রবার সাতটা থেকে। যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পাঁচ আধিকারিক হানা দেন শাহজাহান শেখের বাড়িতে। তারা যখনই সরবেড়িয়া গ্রামের ওই তৃণমূল নেতার বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করেন তখনই গ্রামের বেশ কয়েকজন তাদের বাধা দেওয়ার জন্য বিক্ষোভে সামিল হন। জানা যাচ্ছে যারা বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন তারা শাহজাহানের অনুগামী।
ইডি আধিকারিকদের তরফ থেকে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে যখন ডাকাডাকি শুরু হয় সেই সময় কোন সাড়া না পেলে তারা দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। ঠিক সেই সময় গ্রামবাসীদের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর আক্রমণ চালানো হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে তাদের শেষমেশ প্রাণে বাঁচতে গ্রাম ছাড়তে হয়। যেখানে রাজ্যের বড় বড় মন্ত্রী এবং বিধায়ক অথবা অন্য কোন নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি বা গ্রেপ্তারের সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি, সেই জায়গায় সামান্য একজন তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হলো। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে কে এই শাহজাহান শেখ?
আরও পড়ুন ? How to become CBI: চাইলে আপনিও হতে পারেন CBI অফিসার, মিলবে মোটা টাকা, জানুন পদ্ধতি
শাহজাহান শেখ এলাকার তৃণমূলের কনভেনর বলে জানা যাচ্ছে স্থানীয় সূত্রে। তিনি রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বলেও জানা যাচ্ছে স্থানীয় সূত্রে। এর পাশাপাশি তিনি জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। ইডি আধিকারিকরা এদিন তার বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন মূলত রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করার জন্য বলেই জানা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থা সূত্রে।
সন্দেশখালির এমন একজন বাহুবলির উত্থান হয়েছিল বাম আমলে বলেই জানা যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের পালাবদলের পর অবশ্য তার দাপট কোনোভাবেই কমেনি। তিনি দল পরিবর্তন করে শাসক দলে নাম লিখিয়ে নিজের দাপট ধরে রাখেন। তার কোনদিন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিধায়ক অথবা সাংসদ হওয়ার মতো ইচ্ছে না থাকলেও তিনি এলাকার হর্তা কর্তা বিধাতা। তার ডাকে সন্দেশখালি এলাকায় বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায় বলে জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ।