টানা ১০০ দিন কোনো করোনা আক্রান্ত নেই, রেকর্ড গড়লো নিউজিল্যান্ড ও ফিজি

নিজস্ব প্রতিবেদন : গোটা বিশ্বে যখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তখন জুন মাসের প্রথম দিকেই নিউজিল্যান্ড সরকারের তরফ থেকে তাদের দেশকে করোনা মুক্ত দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা করেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। দেশকে করোনা মুক্ত ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড সরকারের তরফ থেকে বিশ্বে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করা হয়। তবে এর পরে যখন বিদেশ থেকে দেশে ফেরা শুরু হয় তখন হঠাৎ করে আবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধরা পড়ে। কিন্তু তাতেও নিউজিল্যান্ড সরকার বিচলিত না হয়ে বিদেশ থেকে আসা প্রত্যেককে কোয়ারেন্টাইনে রেখে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আর তার ফলস্বরূপ টানা ১০০ দিন নিউজিল্যান্ডে স্থানীয়ভাবে কোন আক্রান্তের হদিস নেই। আর এমন রেকর্ড সৃষ্টি করা দেশ হিসাবে নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি নাম লেখায় ফিজি-ও।

বর্তমানে নিউজিল্যান্ডের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। সেখানে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক নিয়েই চলছে রাগবি খেলা। পাশাপাশি খুলে দেওয়া হয়েছে রেস্তোরাঁ। প্রতিদিন সেখানকার মানুষ করোনাতঙ্ককে দূর করে রাস্তায় চলাফেরা করছেন। তবে তারা এখনো সতর্ক, আর এই সতর্ক থাকার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে সে দেশে স্টেডিয়াম, রেস্তোরাঁ ছাড়াও পানশালা, সিনেমা হল, শপিংমল সবই চলছে স্বাভাবিক ভাবে। নিউজিল্যান্ড সরকারের তরফ থেকে কঠোর ভাবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যেগুলি হলো সরকারের কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ ব্যবহার করা, হাইজেনিক খাবার ব্যবহার করা ইত্যাদি বিষয়ে।

নিউজিল্যান্ডে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা গিয়েছিল সে দেশের সরকারকে। যে কারণে মার্চ মাসের পর থেকে সে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়াই নি। মার্চের পর থেকে সে দেশে যে সকল আক্রান্তের হদিস পাওয়া যায় তারা প্রত্যেকেই বিদেশ থেকে আগত। মোটের উপর দেশের ভিতরে সংক্রমণ রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আর এই জয়ের কারণে বিশ্বের বহু অতিমারি বিশেষজ্ঞরা নিউজিল্যান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

ইউনিভার্সিটি অফ ওটাগোর অতিমারী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিশ্বের পাশ্চাত্যের দেশগুলো করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ। সঠিক পরিকল্পনা, বিজ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এসকল বিষয়গুলির যদি সঠিক মিশ্রণ না থাকে তাহলে জয় পাওয়া সম্ভব নয়। গোটা বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যাবে এগুলোর সঠিক মিশ্রন যেসব দেশে রয়েছে সেসব দেশেই ভাইরাসকে পরাস্ত করা গেছে।

যদিও স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ১০০ দিনের বেশি রুখে দেওয়া সম্ভব হলেও নিউজিল্যান্ড সরকার এখনও সংক্রমণ নিয়ে খুব সতর্ক। তাদের স্বাস্থ্য অধিকর্তা চিকিৎসক অ্যশলে ব্লুমফিলড জানিয়েছেন, “১০০ দিন ধরে করোনা আক্রান্ত না মেলা নিঃসন্দেহে সাফল্যের। তবে এখন আত্মতুষ্ঠির কোনও জায়গা নেই।”

আর এমন সাফল্য পাওয়া নিউজিল্যান্ড এবং ফিজি এই দুই দেশ নিয়ে ফিজির প্রধানমন্ত্রী Frank Bainimarama জানিয়েছেন, “গোটা বিশ্বের মধ্যে ফিজি এবং নিউজিল্যান্ড একমত দুটি দেশ যেখানে গত ১০০ দিনের স্থানীয় কোন করোনা আক্রান্তের হদিস নেই।”