কোথা থেকে এলো নগদ ১৯৪ কোটি, জেরায় জানালেন সুগন্ধি ব্যবসায়ী পীযূষ জৈন

নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশজুড়ে এখন শোরগোল ফেলে দিয়েছেন যিনি তিনি হলেন অখিলেশ যাদব ঘনিষ্ঠ সুগন্ধি ব্যবসায়ী পীযূষ জৈন। তার এই ভাবে শোরগোল ফেলে দেওয়ার মূলে রয়েছে তার সম্পত্তি। বাড়িতেই নগদ রাখা ছিল ১৯৪ কোটি টাকা, এছাড়াও আরও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী সোনা, চন্দন কাঠ এসব মিলে এই সম্পত্তির পরিমাণ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সুগন্ধি ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনর বাড়িতে ডিজিজিআই সংস্থার সদস্যরা হানা দেওয়ার পর এই সকল সম্পত্তি উদ্ধার করেন। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং সোমবার আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই উঠে এসেছে এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কোথা থেকে এলো?

অভিযান চালানোর সময় আধিকারিকরা একবার ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কোত্থেকে এলো। সেই প্রশ্নের উত্তরে ঠাট্টার সুরে পীযূষ জানিয়েছিলেন, ‘পৈত্রিক সম্পত্তি ৪০০ কেজি সোনা বিক্রি করে এই নগদ পেয়েছি।’ পরে অবশ্য এই সকল ঠাট্টা-তামাশা সব দূর হয়ে যায়। জোরদার তদন্ত চলাকালীন ওই ব্যবসায়ী নাকি তার সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে তদন্তকারী অফিসারদের তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এই বিষয়ে ডিজিজিআই-এর এক কর্তা জানিয়েছেন, “পীযূষ জৈন স্বীকার করেছেন যে বিনা জিএসটিতে পণ্য বিক্রি করে কর ফাঁকি দিয়ে এত পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছিলেন তিনি।” তবে এরপরেও প্রশ্ন থেকে যায়, কেবলমাত্র কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে এত টাকার সম্পত্তি কিভাবে সম্ভব? যদিও এই বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা বলেই জানা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ডিজিজিআই অফিসাররা যখন ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় তখন তার বাড়ি থেকে ৫০০টি চাবি পাওয়া যায়। সেই সকল চাবির কূলকিনারা করতে অফিসারদের মাথার ঘাম পায়ে পড়ে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে তালা ভাঙ্গার কারিগর আনা হয় এবং মাটি খুঁড়ে সম্পত্তি বের করার জন্য শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। এমনকি ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুকিয়ে থাকা সম্পত্তির হদিশ পেতে লখনৌ থেকে আনা হয় বড় এক্স-রে মেশিন। এরপরই তন্নতন্ন করে চলে সম্পত্তির খোঁজ।

৮৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ৩৪ জন আধিকারিক তল্লাশি চালানোর পর ওই সুগন্ধি ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনর বাড়ি থেকে পাওয়া যায় ১৯৪ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা নগদ, ১২৫ কেজি সোনা, ৬০০ কিলো চন্দন কাঠ এবং কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির নথি। নগদ পাওয়া টাকা গুনতেও হিমশিম খেতে হয় আধিকারিকদের। একের পর এক টাকা গোনার মেশিন নিয়ে দিনরাত এক করে চলে টাকা গোনার কাজ।