ক্লাস ৮ পাশ এই মহিলার মাসে রোজগার ২০ লাখ, তুখোড় টেকনিক জ্ঞান

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : পুঁথিগত বিদ্যা যে সব সময়ই কাউকে বৃহৎ আকারে নিয়ে যাবে এমনটা নয়। যে কারণে এই পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে থেকেও বিশ্বকবি হয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেইরকমই আরও এক মহিলা এই পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে টেকনিক লাগিয়ে মাছের লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করার পাশাপাশি রয়েছে ঝুলিতে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার।

কোনরকম রূপকথা নয়, বরং বাস্তবের এই গল্পকে বাস্তবায়িত করেছেন রাজস্থানের সন্তোষ পাচার। সন্তোষ পাচার এবং তার স্বামী ২০ বছর আগে প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষি কাজ শুরু করেছিলেন। দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারের সদস্যদের সেই ভাবে দিন কাটতো না চাষবাস করেও। সন্তোষ পাচার মূলত গাজর এবং অন্যান্য শাকসবজি চাষ করতেন। কিন্তু তাদের গাজর অন্যান্য চাষীদের তুলনায় গুণগত মানের দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকার কারণে অনেকেই তা কিনতে চাইতেন না।

তবে তিনি হাল ছেড়ে দেননি। প্রাকৃতিক উপায়ে চাষ করার জন্য সরকার আয়োজিত একটি কর্মশালায় যোগ দেন তারা। এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলেন। তারপর ধীরে ধীরে তাদের চাষের ভুলত্রুটি সামনে আসতে থাকে। তবে তারপরেও সাফল্য তাদের কাছে অধরাই থেকে যায়। এরইমধ্যে সন্তোষের মাথায় আসে এক নিনজা টেকনিক।

তিনি গাজরের বীজের সঙ্গে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘি এবং মধু মিশিয়ে তা সরাসরি সূর্যের আলোয় শুকিয়ে সাধারণভাবে শুকানো শুরু করেন। সাধারণভাবে শুকিয়ে যাওয়ার পর সেই সকল বীজ তিনি মাটিতে পুঁতে দেন। ঘটনাচক্রে দেখা যায় এই পদ্ধতিতে চাষ করার পর যে গাজর পাওয়া যায় তা আকারে বড় এবং তুলনায় মিষ্টি। এই সকল গাজর বাজারে বিক্রি করা শুরু করতেই ব্যাপক চাহিদা বাড়ে।

এই ধরনের গাজরের চাহিদা বাজারে বিপুল পরিমাণ বাড়তে থাকার পর তারাও সেই চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হন। তখন তারা ঠিক করেন এই পদ্ধতি সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে শুরু করে দেন চাষীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ। তাদের এই চাষের পদ্ধতি ধীরে ধীরে চতুর্দিকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত সন্তোষ পাচার রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান।

ক্লাস এইট পাশ করা এই মহিলার নতুন কিছু শেখা এবং মাথা খাটিয়ে নতুন উদ্ভাবনী পথ খুঁজে বের করাই হল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, সন্তোষ এবং তার পরিবার একসময় এই পদ্ধতিতে চাষ করে মাসে দেড় লক্ষ টাকা রোজগার করেছেন এবং পরে তারা ৭০০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাঁদের পরীক্ষা তাঁদের দিগন্ত বিসঋত করে দেয়। বর্তমানে তাঁদের মাসিক আয় প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।