নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বে এর আগে যে ঘটনা কোনদিন ঘটেনি সেই ঘটনা করে দেখিয়েছিলেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেব। দেবীর আসনে নিজের স্ত্রীকে বসিয়ে ধ্যানমগ্ন হয়ে পুজো করেছিলেন তিনি। ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারীকে দেবী শক্তি হিসাবে সম্মান করার কথা উল্লেখ থাকলেও এমন ঘটনা এর আগে বিশ্বে কখনো দেখা যায়নি। অনেকেই আছেন যারা এই সাধনা শক্তির সঙ্গিনী হয়েছিলেন। রামকৃষ্ণদেব এই অসাধ্য সাধন সেধেছিলেন ফলহারিণী অমাবস্যায়।
১৮৭২ সালের জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই রামকৃষ্ণদেব সারদা দেবীকে ষোড়শী রূপে পুজো করেছিলেন। যে কারণে রামকৃষ্ণ আশ্রম এবং মঠে এই অমাবস্যা পুজো ষোড়শী পুজো নামে পালন করা হয়ে থাকে। ফলহারিণী অমাবস্যা কৌশিকী অমাবস্যার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে বাংলার অন্যতম সাধন ক্ষেত্র তারাপীঠে এই দিন প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। যা কৌশিকী অমাবস্যার পর দ্বিতীয় সমাগমের দিন হিসাবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
ভগবান ও ভগবতীর এই অপূর্ব আত্মিক মিলন এই মহিমাময় ফলহারিণী অমাবস্যা। এই বছর এই ফলহারিণী অমাবস্যা হয়েছে আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার। রবিবার দুপুর ২ টো ২৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে শুরু হবে এই অমাবস্যা এবং তা চলবে পরদিন অর্থাৎ সোমবার দুপুর ৩ টে ৪৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড পর্যন্ত।
শাস্ত্রে বলা আছে, ‘জীবনেয সর্বস্ব’ অর্থাৎ একদিকে ফলহারিণী, সাধকের কর্মফল হরণ করেন। জ্যৈষ্ঠ মাসে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি ফল খুব সহজে পাওয়া যায়। যে কারণে ভক্তরা ইষ্ট দেবতাকে নানান ফল দিয়ে প্রসাদ দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে এই তিথীতে ভক্তদের অভীষ্টফল, মোক্ষফল প্রদান করেন।
ফলহারিণী অমাবস্যায় মা কালী নিজে তার সন্তানদের শুভ ফল প্রদান করেন এবং সেই সঙ্গে তাঁদের অশুভ ফলও হরণ করে থাকেন। মানুষ সারা জীবন কর্ম করে থাকেন আর মনে করা হয় তাদের সেই কর্মের ফল দিয়ে থাকেন দেবী কালিকা। কথিত আছে, ফলহারিণী অমাবস্যায় প্রত্যেকের বিদ্যা, কর্ম ও সেই সঙ্গে অর্থভাগ্যের উন্নতি ঘটে। প্রেম-প্রণয়ে সমস্ত বাধা দূর হয়। দাম্পত্য সাংসারিক জীবনেও সুখশান্তি লাভ হয়।