Chandrayaan 3 : আপাতত দেশবাসী তাকিয়ে চন্দ্রযান ৩ দিকে। দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরোর এই অভিযানের ওপর অনেকখানি নির্ভর করছে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে চন্দ্রযান ৩। এলএমভি থ্রি রকেটকে সঙ্গী করে চন্দ্রযান ৩ অভিযান শুরু হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৩ অথবা ২৪ আগস্ট চাঁদের মাটিতে পা রাখবে চন্দ্রযান ৩।
কিন্তু আপনি কি জানেন দেশের এই বিশাল কর্মকান্ডের নেপথ্যেও রয়েছেন একজন মহিলা। যাকে রকেট উইমেন অফ ইন্ডিয়াও বলা হয়। অভিযানের গুরুদায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই নারী শক্তি চন্দ্রযান ৩ এর ডিরেক্টর। তিনি ইসরোর একাধিক গবেষণার কাজ সামাল দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশ গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তিনি ঋতু করিধাল।
জানা যায়, একটি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে যাত্রা শুরু করে আজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের গুরু দায়িত্ব সামাল দিচ্ছেন। লখনউয়ের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ঋতু করিধাল। ঋতু দেবী তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন লখনউয়ের সেন্ট অ্যাগনেস স্কুল থেকে। তারপর মহিলা বিদ্যালয় পি জি কলেজ থেকে পর্দার্থবিজ্ঞানে স্নাতক পাশ করেন। লখনউয়ের বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন ঋতু।
ঋতু করিধালের আসল যাত্রা শুরু হয় এরপর থেকেই। স্নাতকোত্তরে দারুন ফল করেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রবেশিকা পরীক্ষা গেট দিয়ে তিনি সুযোগ পান ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে। পড়াশোনা শুরু করেন অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এখান থেকেই করে এম.টেক। এম.টেক শেষ করে তিনি পিএইচডি শুরু করেন। একই সঙ্গে একটি কলেজে পার্ট টাইম পড়ানোর কাজও শুরু করেন তিনি। তার মধ্যে আবেদন করেন ইসরোতে। খুব বেশি সময় লাগেনি। পরীক্ষা, ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পড়ে ইসরো থেকে। পেয়ে যান ইসরোর অফার লেটার।
কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর ঋতু করিধালের জীবনে শুরু হয় বিড়ম্বনা। জানতে পারেন, চাকরি করতে করতে পিএইচডি করা যাবেনা। অথচ পিএইচডি ছাড়তে চাননি তিনি। প্রফেসর মনীশ গুপ্তার নির্দেশনায় তিনি পিএইচডি করছিলেন। ঋতুর শিক্ষক তাকে বলেন, এত ভাল চাকরির অফার ফেরানো ঠিক হবে না। প্রফেসরের সেই কথা মতো ১৯৯৭ সালে ইসরাতে যোগদান করেন ঋতু। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
মঙ্গল যান মিশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন ঋতু পরিধান মার্স অবটিটার মিশনের ডেপুটি অপারেশনস ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। মঙ্গলযান কোন পথ ধরে এগিয়ে যাবে, উৎক্ষেপণে কত দিন, কত ঘণ্টায় তা মঙ্গলের কোন কক্ষপথে ঢুকে পড়বে, সেইসব কিছু চূড়ান্ত করার দায়িত্ব ইসরো যাঁদের উপর দিয়েছিল ঋতু তাঁদের মধ্যমণি ছিলেন। কম বয়সেই একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন ঋতু করিধাল। ২০০৭ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের হাত থেকে পেয়েছেন ইয়ং সায়েন্টিস্ট আওয়ার্ড।
২০১৯ সালে চন্দ্রযান ২ এর সময়ও গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন ঋতু করিধাল। সে সময় তাকে মিশন ডিরেক্টর এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০২০ সালে ইসরো ঠিক করে, চন্দ্রযান ৩ অভিযানের দায়িত্ব থাকবে বিশ্বস্ত এই নারী শক্তির হাতে। চন্দ্রযান-৩ মিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর পি ভিরামুথুভেল। এছাড়াও, এম বনিতা, যিনি চন্দ্রযান-২ মিশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ছিলেন, চন্দ্রযান-৩ মিশনে তাঁকে ডেপুটি ডিরেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি পে লোড, ডেটা ম্যানেজমেন্টের কাজ পরিচালনা করছেন।