মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে পানের পিক! সৌজন্য দেখালেন বিজেপি নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজনীতি হলো নীতির রাজা। অথচ বঙ্গ রাজনীতিকে দিন দিন যেভাবে কদর্য ভাষার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে তাতে প্রতি ক্ষণেই হারিয়ে যাচ্ছে সৌজন্য। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন সৌজন্য লক্ষ্য করা যায় যা উদাহরণ হয়ে থাকে বছরের পর বছর।

গত লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৎকালীন বাম প্রার্থী ডাঃ রেজাউল করিম এবং তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় প্রচারে বেরিয়ে সৌজন্যতা দেখেছিল গোটা বাংলাকে। আর এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে একই রকম ভাবে রাজনীতিতে সৌজন্যের নজির গড়লেন শিলিগুড়ির এক বিজেপি নেতা অখিল বিশ্বাস।

শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে সোমবার ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জনসভায়। আর এই জনসভাকে ঘিরে তৃণমূল কর্মীরা শহরকে সাজিয়ে তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাসিমুখের ফ্লেক্স ব্যানারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই সকল একাধিক ছবির মধ্যে একটি ছবিতে কেউ বা কারা পানের পিক ফেলে দেন।

পেশায় আইনজীবী শিলিগুড়ির বিজেপি নেতা অখিল বিশ্বাস আদালত থেকে বাড়ি ফেরার সময় এমন অস্বস্তিকর ছবিটি দেখতে পান। আর সেই ছবি দেখেই রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং রাজনৈতিক দূরত্ব ভুলে তিনি এগিয়ে এসে নিজস্ব উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে থাকা সেই পানের পিক পরিষ্কার করে দেন। যার পরেই নিজের দল তো অবশ্যই, তৃণমূলের তরফ থেকেও ওই বিজেপি নেতার প্রশংসা করা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, অখিল বাবু এমন অস্বস্তিকর ছবিটি দেখার পর তা পরিষ্কার করার জন্য রাস্তা দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া তৃণমূল কর্মী এবং পুলিশ সহ অন্যান্যদের ডাকেন। কিন্তু কাউকেই কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি। যার পরেই তিনি নিজ উদ্যোগে এক টোটো ড্রাইভারকে ডেকে পুলিশকর্মীর থেকে জল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে থাকা ওই পানের পিক পরিষ্কার করেন। বর্তমানে তাঁর সম্প্রীতির রাজনীতি শিলিগুড়ির কোর্টমোড় এলাকায় চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অখিল বাবুর এমন সম্প্রীতি দেখে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রঞ্জন সরকার জানিয়েছেন, “উনি আমার কাছে বিজেপি নেতার থেকে একজন বন্ধু হিসেবেই বেশি পরিচিত। উনার কাজে আমি অত্যন্ত গর্বিত। হয়তো কেউ ভুল করে এই কাজ করেছিল, উনি তা দেখে পরিষ্কার করে দেন। এই বিষয়ে আমজনতাকেও সজাগ থাকতে হবে।”

অখিল বাবু জানিয়েছেন, “আমার মনে হয় মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সবার মুখ্যমন্ত্রী। যে কারণে তাঁর ছবির উপর এমন অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটায় আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখ পেয়েছি এবং দুঃখ পেয়ে তা পরিষ্কার করে দিয়েছি।”