নিজস্ব প্রতিবেদন : পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার সবজি পাড়ি দিচ্ছে বিভিন্ন দেশে। যেমন ভাঙরের সবজি চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, ঠিক সেই রকমই আবার নদীয়ার সবজিপাতি চলে যাচ্ছে ইউরোপ। সবজির এই সকল তালিকায় যেমন পটল, ঝিঙে, কুমড়ো ইত্যাদি রয়েছে ঠিক সেই রকমই আবার রয়েছে জুকিনি বা বকচই। তবে এই সকল সবজি চাষের জন্য একদিকে যেমন প্রয়োজন অর্গানিক চাষ ঠিক সেইরকমই আবার প্রয়োজন আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ (Agriculture)।
কিন্তু আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বাংলার চাষীদের আর্থিক অবস্থা। কেননা অধিকাংশ চাষীরাই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ার কারণে আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা অথবা ভাড়া নেওয়ার সুযোগ পান না। এমন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার রাজ্য কৃষি দপ্তর ঐ সকল চাষীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আগামী ১ এপ্রিল থেকে নতুন একটি প্রকল্প চালু করতে চলেছে। যে প্রকল্পের মধ্য দিয়ে ১৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি (Agriculture Subsidy) দেওয়া হবে।
কৃষি কাজে এমন পরিবর্তন আনার জন্য আগামী দু’বছরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কৃষি দপ্তরের তরফ থেকে রাজ্যে ৫০০টি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার এবং ১৫০০টি ফার্ম মেশিনারি হাব তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এসবের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। নতুন সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ড্রোনের মাধ্যমে কীটনাশক ছড়ানো থেকে শুরু করে মেশিন দিয়ে চারা রোপন করা, ধান বা গম ঝাড়ানো ইত্যাদির কাজের জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন ? Kisan Credit Card: চাষের জন্য মিলবে লক্ষ লক্ষ টাকা, শুধু কৃষকদের করতে এই একটি কাজ
তবে এই সকল যন্ত্রপাতি কেনার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তা চাষীদের কাছে না থাকার কারণেই ২০১৪ সাল থেকে কাস্টম হায়ারিং সেন্টার তৈরি করার কাজ শুরু করেছে রাজ্য কৃষি দপ্তর। যে সকল সেন্টার থেকে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, সোলার পাম্প, মিনি ডাল মিল, তেল মিল, বীজ ড্রিল, থ্রেশার, স্প্রেয়ার, কম্বাইন হারভেস্টর, রোটাভেটর ইত্যাদি ন্যায্য মূল্যে ভাড়া পেয়ে থাকেন চাষিরা। এক্ষেত্রে এবার এই ধরনের সেন্টার চাষীরা অথবা তাদের সংগঠন নিজেরাই তৈরি করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
এই ধরনের সেন্টার তৈরি করতে অন্ততপক্ষে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে। যে কারণে যদি চাষীদের নিজেদের বা এফপিও এই ধরনের সেন্টার তৈরি করতে চায় রাজ্য কৃষি দপ্তর ১৬ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেবে। সরকারিভাবে ১৬ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার পাশাপাশি বাকি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণের মাধ্যমে বন্দোবস্ত করার ব্যবস্থা করা হবে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবেও এই ধরনের সেন্টার তৈরি করতে চান তাহলেও এমন সুবিধা মিলবে। ২০১৪ সাল থেকে রাজ্যে এখনো পর্যন্ত ২২৮টি এমন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।