Taruner Swapno Scheme: সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বহু প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। তেমনি শিক্ষার্থীরাও যাতে আর্থিক অভাবে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য স্কলারশিপ প্রদান পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আর সেই সব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম হলো তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প (Taruner Swapno Scheme)। যে প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা করে ট্যাব কেনার জন্য দেওয়া হয় দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের। সেই মতো চলতি বছরেও ট্যাবের জন্য ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার। তারপরে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট। আর সেখানেই দেখা গেছে বহু পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতি। যা দেখে একাংশ শিক্ষকদের দাবি ট্যাবের টাকা পেতেই পরীক্ষায় বসছে না বহু পরীক্ষার্থী। তাহলে কি আগামী বছরেও স্কুলছুট বাড়বে? প্রশ্ন শিক্ষকমহলে।
এ প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি আগামী বছর থেকে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের (Taruner Swapno Scheme) টাকা দেওয়া হবে একাদশ শ্রেণী থেকে। কিন্তু চলতি বছরে পরীক্ষার আগে ট্যাবের টাকা পেয়ে যে পরিমাণ স্কুলছুট দেখা গিয়েছে তাতে করে শিক্ষকমহলে প্রশ্ন আসন্ন বছরে থেকে একাদশ শ্রেণীতে ট্যাবের অনুদান দেওয়া হলে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়বে না তো? এই প্রসঙ্গে কি বলছে শিক্ষা দফতর? চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক টেস্টে কত শতাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি?
আরো পড়ুন: প্ল্যাটফর্ম সংস্করণের কাজে ব্যবহার হচ্ছে রাফ গ্রানাইট, কিভাবে সাজানো হবে হাওড়াকে
খবর রয়েছে বহু স্কুলেরই প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক টেস্টে অনুপস্থিত রয়েছে। জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের নবপল্লী জেসিএস হাইস্কুলের ১৮৩ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত রয়েছে ৬৩ জন। ১০,০০০ টাকা পাওয়ার পর থেকেই স্কুলে অনুপস্থিতি দেখা গিয়েছে টেস্ট পরীক্ষার্থীদের। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাঁচুয়াখালি হাইস্কুলের ১০২ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭ জন পরীক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষা দেয়নি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার আরও একটি স্কুলের ১৭২ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ জন পড়ুয়া টেস্ট পরীক্ষায় অনুপস্থিত রয়েছে। মূলত অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকার পর থেকেই এই পড়ুয়ারা স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে।
আরো পড়ুন: ২৬-এর ভাবি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য কুণালের
এছাড়াও মগরহাটের মল্লভপুর আদর্শ বিদ্যামন্দিরে ৯০ জন উচ্চ মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষার মধ্যে ৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন পুজোর ছুটির আগে পর্যন্ত তাদের স্কুলে উপস্থিতি রয়েছে। মূলত পুজোর ছুটির আগেই টাকা ঢুকেছে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে। আর তারপর থেকেই অর্থাৎ পুজোর ছুটির পর থেকেই স্কুল আসা বন্ধ করেছে পরীক্ষার্থীরা। যা দেখে সকল স্কুলের শিক্ষকদের অনুমান মূলত তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের (Taruner Swapno Scheme) টাকা পাওয়ার পর থেকেই তারা স্কুল ছেড়ে দিয়েছে। এই বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার জানিয়েছেন এই উদাহরণ আগেও পাওয়া গিয়েছে। ট্যাবের টাকার মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্কুলে আটকে রাখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক সংগঠনের দাবি এইভাবে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা না দিয়ে প্রতি স্কুলে স্মার্ট ক্লাসের ব্যবস্থা করা হোক। এতে শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশ লাভ হতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের উক্তি প্রতিবছরই বিভিন্ন কারণে কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অনুপস্থিতি দেখা যায়। এর সাথে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের (Taruner Swapno Scheme) কোনো সম্পর্ক নেই। পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকার দরকার রয়েছে। এর মাধ্যমে বহু পড়ুয়া নিজেদের পড়াশোনা চালায়।