Sundarban Tourism is now more fun than ever: সুন্দরবন! ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত এই বন্য এলাকা। যদিও সুন্দরবনের বেশিরভাগই অবস্থিত ভারতের মধ্যে। এখানেই রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বাস। সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ আসে এই এলাকায়। চারিদিকে জল আর দ্বীপ দিয়ে ঘেরা এই জঙ্গল এলাকায় এখনও সবকটি দ্বীপের সাথে যোগাযোগ ঘটানো সম্ভব হয়নি। এলাকার পরিবহন ব্যবস্থা এবং গ্রাম্য জীবন এখনও ততটা উন্নত নয়। এখনও বহু দ্বীপ রয়েছে যে জায়গাগুলি সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পের অন্যতম ভিত এই সুন্দরবন। তাই সুন্দরবনের পর্যটন (Sundarban Tourism) শিল্পকে আরো উন্নত করতে এবং স্থানীয়দের কথা চিন্তা করে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চলেছে রাজ্য সরকার।
প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয় সুন্দরবনের এলাকাবাসীদের। না আছে ভালো পরিবহন ব্যবস্থা, না আছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এমন কি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পেতেও সমস্যায় পড়তে হয় স্থানীয়দের। এই সবকিছুর কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সুন্দরবন এলাকায় রোরো পরিষেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিষেবার মাধ্যমে সুন্দরবনের একাধিক দ্বীপপুঞ্জের সাথে মূল দ্বীপের যোগাযোগ ঘটানো অনেক সহজ হবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। তৈরি করা হবে রোরো জেটি। যার মাধ্যমে বড় গাড়ি অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারবে সুন্দরবনের একাধিক দ্বীপে। শুধু জেটি নয়, দেওয়া হবে ভেসেল পরিষেবাও। সাথে থাকবে উন্নত মানের ওয়েটিং রুম এবং পরিচ্ছন্ন টয়লেটের ব্যবস্থা। এই পরিষেবা চালু হলে একদিকে যেমন উপকৃত হবেন এলাকাবাসী, তেমনই উপকৃত হবে পর্যটন শিল্প (Sundarban Tourism)।
কিছুদিন আগেই পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন। সমগ্র এলাকা পরিদর্শন করার পর কোথায়, কোথায় কিভাবে পরিষেবা চালু করা হতে পারে সে বিষয়ে সাক্ষাৎকারও দেন তিনি। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবনের এলাকার উন্নতিকল্পে বিশেষভাবে নজর দিতে বলেছে। গোসাবার মতন এলাকাতেও চালু হতে পারে রোরো পরিষেবা। এই পরিষেবা চালু হলে শুধুমাত্র পর্যটন শিল্প (Sundarban Tourism) নয়, উন্নত হবে এলাকাবাসীর জীবনযাত্রা। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে জীবনযাত্রা এমনিতেই খানিকটা সহজ হয়ে যাবে।
রোরো কথার অর্থ হল রোল অন রোল অফ পরিষেবা। সুন্দরবনের নতুন এলাকায় রোরো পরিষেবা ছাড়া বড় গাড়ি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। সেই জন্য সুন্দরবনের গোসাবা, পাথরপ্রতিমার মতন এলাকাগুলির সাথে মূল দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন মজবুত নয়। শুধুমাত্র নৌকোর উপর ভরসা করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করা সম্ভব নয়। তাইজন্য এই পরিষেবা চালু করার কথা ভাবছে সরকার। যে সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স যাবার কোন সুযোগই নেই, সেই সমস্ত এলাকাতেও অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে যে কোন বড় গাড়ি পৌঁছে যেতে পারবে খুব সহজেই। অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে সমস্যায় পড়তে হবে না কোন মানুষকে। উপকৃত হবেন এই সমস্ত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
সুন্দরবন এলাকার প্রত্যন্ত দ্বীপগুলির সাথে মুলদ্বীপের যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য কংক্রিটের ব্রিজ তৈরি করার কথা চিন্তা করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবেশগত কারণে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তার জন্যই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে রোরো পরিষেবাকে। এই পরিষেবা চালু হলে শুধুমাত্র এলাকাবাসীর জীবন নয় উন্নত হবে এলাকার আর্থিক পরিকাঠামো। রোরো পরিষেবা চালু হলে খুব সহজেই বড় গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায়। খুব স্বাভাবিকভাবে বাড়বে পর্যটকদের আনা গোনা। আর পর্যটকদের যাতায়াত বাড়লে উন্নতি হবে পর্যটন শিল্পের (Sundarban Tourism)। এই এলাকাবাসীর আর্থিক উন্নতি সাধনা করা সম্ভব পর্যটন শিল্পের মাধ্যমেই।