নিজস্ব প্রতিবেদন : শুক্রবার থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ৬ দিনের জন্য বন্ধ হল তারাপীঠ মন্দির। এই সময়কালে তারাপীঠ মন্দিরে কোন ভক্তের প্রবেশ করা যাবে না। তারাপীঠ মন্দির কমিটি, বীরভূম জেলা প্রশাসন এবং তারাপীঠের হোটেল ব্যবসায়ীরা বৈঠক করে সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
টানা ৬ দিন তারাপীঠ মন্দির বন্ধ রাখার মূলে রয়েছে করোনা সংক্রমণ। আসলে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রয়েছে কৌশিকী অমাবস্যা। কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে বীরভূমের তারাপীঠে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থীদের সমাগম হয়ে থাকে। সিদ্ধ পিঠে তারাপীঠে এই তিথিতে বামাক্ষ্যাপা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বলে কথিত রয়েছে। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর কাতারে কাতারে ভক্তরা ঢল নামান তারাপীঠে।
কিন্তু এই সময় অর্থাৎ বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এই এত সংখ্যক মানুষের সমাগম বিপদ ডেকে আনতে পারে এমনটা আশঙ্কা করেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে মন্দির বন্ধ থাকলেও রীতিনীতি অনুযায়ী তারা মায়ের নিত্য পূজা হবে এবং কৌশিকী অমাবস্যাতেও মায়ের পুজো হবে। সেক্ষেত্রে কেউ তারা মায়ের পুজো দিতে চাইলে তারা পুরোহিতের সাথে যোগাযোগ করে পুজো দিতে পারবেন। এমনটাই জানিয়েছেন তারাপীঠ মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চ্যাটার্জী।
৬ দিনের জন্য তারাপীঠ মন্দির বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত আগস্ট মাসে রামপুরহাটে ত্রিপাক্ষিক একটি বৈঠকের মধ্য দিয়ে। এর পাশাপাশি এই সময় যাতে ভিন রাজ্য থেকে ভক্তরা তারাপীঠে এসে ভিড় না জমান তার জন্য নাকা চেকিং সহ বর্ডার এলাকাগুলিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন। অন্যদিকে ভিড় এড়াতে ঝাড়খন্ড পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকেও সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে যখন আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি, আবার যখন করোনার তৃতীয় ঢেউ ভ্রুকুটি দিচ্ছে, সেই সময় তারাপীঠে লক্ষ লক্ষ মানুষের এই সমাগমকে ঠেকানোর জন্য সর্বসম্মতভাবে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা বিশেষজ্ঞ মহল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন। যদিও এই কয়েকদিন তারাপীঠ মন্দির বন্ধ থাকায় বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হবে তারাপীঠ মন্দিরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যবসা। তবে ব্যবসায়ীরাও আমজনতার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।