প্রসূন কান্তি দাস: ভুয়ো ভাড়াটিয়াদের (Tenants) মাথায় পড়বে বাজ! রাজ্য পুলিশের পদক্ষেপে ঝট করে পড়বে ফাঁদে। আইনকে ফাঁকি দিয়ে নানা ধরনের বেআইনি কাজ করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভুয়া নথিপত্র তৈরি করা। পশ্চিমবঙ্গে টাকা দিয়ে নকল নথি পত্র তৈরি করার ঘটনা বহুবার সামনে এসেছে। বহু দুষ্কৃতি আছে যারা নকল পরিচয় পত্র তৈরি করে রাজ্যের বা শহরের কোন না কোন জায়গায় ভাড়া থেকে যান। এবং চালিয়ে যান নানা বেআইনি কাজ। কিছু ক্ষেত্রে ধরা পড়েন, শাস্তিও পান। কিন্তু যারা ধরা পড়েন না? তাদের কি হবে? তাদের জন্যই নতুন ব্যবস্থা নিল রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে একটি নতুন অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে যাচাই করা যাবে ভাড়াটিয়েদের যাবতীয় নথিপত্রের সত্যতা।
সমস্ত ভুয়ো নথিপত্র ধরা না গেলেও যে সমস্ত ভাড়াটিয়ারা (Tenants) ভাড়া নেওয়ার জন্য নকল পরিচয় পত্র ব্যবহার করছেন তাদেরকে ধরতে পারবে এই অ্যাপ। সমস্ত জালিয়াতির পর্দা ফাঁস করা সম্ভব হবে এই অ্যাপের মাধ্যমে। কোনও নকল নথিপত্র জমা দিয়ে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সুযোগ আর থাকবে না। এই অ্যাপটির মাধ্যমে শুধু যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। শুধু যে নকল পরিচয় পত্র জমা দিয়ে ভাড়া নিতে চাওয়া ভাড়াটিয়াদের নথিপত্র যাচাই করতে পারবেন তা নয়, এটুকুতেই এই অ্যাপের কাজ শেষ হয়ে যাবে না। সমস্ত নথিপত্র জমা থাকবে এই অ্যাপটির মধ্যেই। ফলে ভবিষ্যতেও যদি কখনো প্রয়োজন পড়ে তাহলে এই অ্যাপ থেকে জেনে নেওয়া যাবে সেই নির্দিষ্ট নথি পত্রটি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য। এই অ্যাপটি এখনো সম্পূর্ণ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। আপাতত এই অ্যাপ তৈরির কাজ চলছে। তবে কাজ প্রায় শেষের পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সামনের মাসেই হয়তো এই অ্যাপ চালু করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোচবিহার ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে ধরা পড়েছে একাধিক বাংলাদেশী জঙ্গি। তারা প্রত্যেকেই কলকাতা শহরে ভাড়া ছিল। ভাড়া নেওয়ার জন্য ব্যবহার করেছিল মিথ্যে পরিচয় পত্র। সৌভাগ্যবশত তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যারা এখনো ধরা পড়েন নি। আইনের চোখের আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছেন দুর্নীতিমূলক কাজকর্ম তাদের কি হবে? তাদেরকে ধরার জন্যই চালু করা হচ্ছে এই অ্যাপটি। তবে এই অ্যাপটি কিভাবে কাজ করবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক। পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এখন থেকে বাড়ি ভাড়া নেবার সময় ভাড়াটিয়া এবং ভাড়াটে (Tenants) উভয়কেই নিজেদের আধার কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয় পত্র জমা দিতে হবে প্রশাসনের কাছে সেই সমস্ত নথিপত্র গুলি যাচাই এর মাধ্যমে ধরা পড়বে সেগুলি নকল না আসল। যদি নথিপত্রগুলি নকল হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বাদ পড়বেন না বাড়ির মালিকও। নথিপত্র জমা দেওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তা খতিয়ে দেখা হবে। কোনরকম ভুল তথ্য দিয়ে কাজ হাসিল করার সুযোগ পাবে না কোন দুষ্কৃতি।
আরও পড়ুন ? Rules before renting: ভাড়াটিয়াদের কথায় কথায় আর পড়তে হবে না সমস্যায়! জানতে হবে এই ৪ নিয়ম
এখানে একটি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যদি কোন বাড়ির মালিক তার বাড়িতে ভাড়া থাকা ব্যক্তির নথিপত্র জমা না দেন তাহলে কি হবে? এমন অনেকগুলি ঘটনাই ঘটেছে। সাধারণত বাড়ির মালিককেই নিজের এবং ভাড়াটে (Tenants) ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য জমা দিতে হয় থানায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে বাড়ির মালিক সেই সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে জমা দিচ্ছেন না। নতুন এই অ্যাপের সাহায্যে এই সমস্যাটিও মেটাতে হবে বলে দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশ। বক্তব্য এখন থেকে আর ছানাই এসে নদীপথে জমা দিতে হবে না অনলাইনে নির্দিষ্ট স্টাইটে গিয়ে আপলোড করতে হবে তাদের নথিপত্র বাড়ির মালিক হোক বা ভাড়াটিয়া সকলকেই এই কাজ করতেই হবে। কোন ভাবেই ফাঁকি দিতে পারবেন না। যদি কেউ তা করেন এবং ধরা পড়েন তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে পুলিশ প্রশাসন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক অ্যাপটি ঠিক কোন পদ্ধতিতে কাজ করবে? প্রথমে কোন ব্যক্তি যদি বাড়ি ভাড়া নেবার জন্য কোন বাড়ির মালিকের কাছে আসেন। তবে সেই বাড়ির মালিককে অনলাইনে নিজের এবং ভাড়া থাকতে চাওয়া ব্যক্তিটি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হবে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে। সমস্ত তথ্য আপলোড করার সাথে সাথেই একটি লিঙ্ক প্রোভাইড করা হবে ওয়েবসাইট থেকে। লিংকটি অটোমেটিক্যালি যাবে ভাড়া নিতে যাওয়া ব্যক্তির রেজিস্টার মোবাইল নম্বরে। সেই লিংকটিতে কি ক্লিক করলে আসবে নথিপত্র আপলোড করার পেজটি। সেখানে প্রত্যেক ভাড়াটে (Tenants) তাদের সঠিক নথিপত্র আপলোড করতে বাধ্য থাকবেন। সেখানে নথিপত্র আপলোড করার সাথে সাথেই জানা যাবে সেটি আসল নাকি নকল। এর জন্য আর আলাদা করে কিছু করতে হবে না। কারো নথী-পত্র যদি নকল প্রমাণিত হয়, তাহলে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য।