The Burdwan couple is earning lakhs of rupees by farming after leaving the job of a multinational company: বর্তমান প্রজন্ম ছুটে চলেছে টাকার পিছনে। কিভাবে উপার্জন বাড়ানো যায় সেই চেষ্টাই করেছে প্রতিটা মুহূর্তে। কেউ খুঁজছে মোটা টাকার চাকরি তো কেউ বেছে নিচ্ছে ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং বা সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলিকে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে উপার্জন করার চাহিদাটা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। সেই পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে বর্ধমানের এক দম্পতি তাদের উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিলেন কৃষিকাজকে। বুদ্ধি খাটিয়ে চাষ করতে পারলে চাষও যে লাভজনক (Farming) জীবিকা হতে পারে তারই প্রমাণ দিলেন বর্ধমানের ১ দম্পতি।
পূর্ব বর্ধমানের জাহান্নগর অঞ্চলের মাধাইপুরের বাসিন্দা অমিতাভ ঘোষ। প্রথম জীবনে তিনিও ১ টি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মোটা টাকা মাইনেও পেতেন সেখান থেকে। কিন্তু নিজের কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল সব সময়। সেই ইচ্ছে থেকে চাষ করার চিন্তাভাবনা মাথায় আসে তার। তার স্ত্রী তাকে বিশেষ কিছু ফল চাষ করার বুদ্ধি দেন আর তাতেই হয় লক্ষী লাভ। স্ত্রীর কথায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফল চাষ করতে শুরু করেন অমিতাভ ঘোষ। তাতে ক্ষতির চেয়ে লাভই হয়েছে বেশি। চাকরি ছেড়ে যে তিনি কোন ভুল করেননি তারই প্রমাণ পেয়েছেন প্রতিটা মুহূর্তে। ঠিকমতো কাজ করতে পারলে জীবিকা হিসেবে কৃষিকাজও (Farming) বেশ লাভজনক।
অমিতাভ ঘোষ তার নিজস্ব বাগানে চাষ করেন বিশেষ কয়েকটি ফল। মাল্টা, ড্রাগন ফ্রুট, কমলালেবু এই সব কিছু পেয়ে যাবেন তার বাগানে। যদিও কমলালেবুর চাষ তুলনামূলক কমই হয়। মাল্টা ও ড্রাগন ফ্রুট বাজারে অত্যন্ত দামী ফল হিসেবে পরিচিত। এগুলি চাষ করে উপার্জনও মন্দ হচ্ছে না অমিতাভর। তিনি বলেন স্ত্রীর বুদ্ধিতে তিনি একটু অন্য ধরনের ফল বেছে ছিলেন চাষ করার জন্য। সেই উদ্যোগ বিফলে যায়নি। বর্তমানে এই ফলগুলি চাষ (Farming) করে বেশ ভালই উপার্জন হচ্ছে তার।
আরও পড়ুন ? Farmer Loan: পিএম কিসান, কৃষকবন্ধু অতীত! এবার এক সিদ্ধান্তেই চাষীদের ঘরে ঢুকল ২ লক্ষ টাকার বেনিফিট
অমিতাভ বলেন, এই ফলগুলি চাষ করে তার যা উপার্জন হচ্ছে, তা দিয়ে ১ টি মধ্যবিত্ত পরিবারের খরচ অনায়াসে চালিয়ে নেওয়া যায়। বরঞ্চ একটু ভালোভাবেই চলবে তাদের জীবন। অমিতাভ মাত্র ১ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করেন এই চাষাবাদ (Farming)। এখন তার মাসিক উপার্জন কয়েক লাখ। চাকরির চেয়ে চাষাবাদ করেই বেশি ভালো আছেন তিনি এমনটাই মত অমিতাভর। চাষের কাজ যে শুধুমাত্র অমিতাভ একা করছেন তা কিন্তু নয়, পাশে থেকে সাধ্যমত সাহায্য করছেন তার স্ত্রীও। অমিতাভর স্ত্রী বর্তমানে একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। কাজের ফাঁকে যতটুকু সময় পান স্বামীর সঙ্গে চাষাবাদে নিযুক্ত থাকেন তিনিও। শুধু বুদ্ধি দিয়েই থেমে থাকেননি অমিতাভর স্ত্রী কৃষ্ণা নন্দী। হাতে হাত মিলিয়ে কাজে সাহায্য করেছেন স্বামীকে।
১ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে চাইলে ৮০ থেকে ৭০ টা পিলার বসাতে হয়, এক একটি ড্রাগন গাছের চারার দাম ন্যূনতম ৫০ টাকা। যদি ভালো জাতের গাছের চারা কিনতে চান তাহলে দাম আরো বেশি পড়ে যাবে। আবার ১ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করার জন্য কমপক্ষে ৭০ টি চারা গাছের প্রয়োজন। প্রত্যেকটি চারা গাছের দাম ন্যূনতম ২৫০ টাকা। উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি হবে পিস হিসেবে। কোন জায়গায় আবার কেজি হিসেবেও বিক্রি হয় এই ফলগুলি। বর্তমানে ১ পিস মাল্টার বাজার দর ৭ টাকা। আর ১ পাল্লা ড্রাগন ফল বিক্রি হয় ১১০০ টাকায়। এছাড়াও চাষের কাজ করার জন্য বেশ কিছু শ্রমিক নিযুক্ত করতে হয়। চাষের কাজে কষ্ট যেমন আছে, ফল লাভের পর আনন্দ হয় ততটাই। চাষাবাদ (Farming) যেমন লাভজনক তেমন আনন্দ দায়কও বটে। অমিতাভের বাগানে শুধু ড্রাগন বা মাল্টা নয়, রয়েছে কমলালেবু আম কাঁঠাল ইত্যাদি অনেক ফলের গাছ।